নিউজ ডেস্ক, চট্টগ্রামের সময়;
চট্টগ্রামের চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল) এমডি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জিএম সিভিল-জিএম এমটিএস শাহজাহান কবির ও কমার্সিয়াল কামরুল এর বিরুদ্ধে বিগত ৫ আগস্ট এরপর থেকে কাজের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া যায়।
চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড এর নিয়মিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মালিকদের,বেশ কিছুদিন যাবত কাজ চলছে টেন্ডারবিহীন কাজের মধ্য দিয়ে। অভিযোগ উঠে তাহাদের নিজ পছন্দের ব্যক্তিদের দিয়ে কাজ করাচ্ছেন বিনা টেন্ডার।
চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের (সিইউএফএল) উৎপাদন বন্ধ ২১৯ দিন। এতে ৭৩৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকার ইউরিয়া সার উৎপাদনের সম্ভব হয়নি৷এছাড়া দীর্ঘদিন উৎপাদন বন্ধ থাকায় গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়।
কারখানাটির একাধিক শ্রমিক কর্মচারীরা জানান, কারখানার উৎপাদন বন্ধ রাখা মানে, এমডি হরিলুটের অন্যতম কৌশল। যেখানে যেটা প্রয়োজন নেই সেটা ইমার্জেন্সি কাজ দেখিয়ে অর্থ লুট করা হয়৷ যত কাজ দেখানো হয়, ততো অর্থ এমডির পকেটে যায়।
বর্তমান উৎপাদন বন্ধ রেখে কারখানার বিভিন্ন যন্ত্রপাতির উপরে রং সহ বিভিন্ন কাজ করা হচ্ছে। কিন্তু এসব কাজের প্রয়োজন নেই। এতে সরকারের হাজার কোটি টাকা গচ্চা যাওয়ার পাশাপাশি কারখানার অনেক যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে ঐ গুলোতে নজর না দিয়ে রং এর কাজ নিয়ে ব্যস্ত। কিন্তু এসব মেরামতের জন্য কর্তৃপক্ষের কোটি টাকা খরচ হবে।
এদিকে কারখানা ও কলোনির বিভিন্ন কাজ তার পছন্দের ঠিকাদার দিয়ে করার অভিযোগও রয়েছে। অন্যদিকে কারখানায় প্রতিদিন ইউরিয়া সার উৎপাদন হয় ১২শ টন। তার মধ্যে প্রতিদিন দুইশত টন ইউরিয়া প্যাকেট করা হয়৷ বাকীগুলো গুদামে রাখা হয়। অথচ সেই গুরুত্বপূর্ণ গুদামটি আড়াই বছরেরও বেশি সময় খোলা রাখা হয়েছে।
গুদামটির ছাদের কিছু কিছু অংশে সৃষ্ট ছিদ্র মেরামত করার সুযোগ থাকলেও পুরো ছাদ মেরামতের জন্য বরাদ্দ নেন এমডি। গুদামের কাজ এখনো সম্পূর্ণ না হলেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে অর্ধেক টাকা পরিশোধ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠেছে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলির অভিযোগ, তারমধ্যে ব্যাগিনের সুইচ মেশিন ফ্লোর এর টেকনিশিয়ানদের রুম দুটি মেরামতের প্রয়োজন নেই তারপরও বিনা টান্ডারে রুম দুটির কাজ করেছে। কনভেয়ার গ্যালারির কাঠ পরিবর্তনের কাজ করেন, বিনা টেন্ডারে কনভেয়ার গ্যালারির টিনের চালা পরিবর্তনের কাজ করেছেন বিনা টেন্ডারে, কনভেয়ার গ্যালারীর চেগার প্লেট এর দুই প্যাকেজের কাজ করেছেন ১কোটি ২০ লক্ষ টাকাও বেশি।
বিনা টেন্ডারে ইউরিয়া প্ল্যান্টের পিলিং টাওয়ারের পাশ্বে স্ট্রাকচার রং এর কাজ ও কোন টেন্ডার ছাড়া পছন্দের ঠিকাদার দিয়ে কাজ করেন তিনি। রিফামার হাউসের রং এর কাজ অন্যান্য ট্যাংক গুলোর কাজ বিনা ট্যান্ডার তার পছন্দের টিকাদারদের দিয়ে কাজ করেন তিনি। এখন আবার নতুন ভাবে অ্যামোনিয়া ও ইউরিয়া প্ল্যান্টর আর পছন্দের ঠিকাদারদের দিয়ে রং এর কাজ করার জন্য পায়তারা শুরু করেছে।
শ্রমিক কর্মচারীরা জানান, এমডি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জিএম, সিভিল /জিএম, এমটিএস শাহজাহান কবির ও কমার্শিয়াল/ বাণিজ্যিক বিভাগের কামরুল সহ এমডি সাথে যোগ সাযুসে করে ঐ বিভাগের কাজ গুলো তাদের পছন্দের লোক দিয়ে ভাগ বাটোয়ারা করেন, নিজের লভ্যাংশ হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা, তার সাথে স্টাফ কোয়ার্টারের বাণিজ্য চলছে লাগামহীন।
এবিষয়ে (সিইউএফএল)র এমডি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন,সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের মাধ্যমে কাজগুলো প্রক্রিয়া করা হয়।নিয়ম অনুযায়ী যে প্রতিষ্ঠান বা আমাদের রুলস অনুযায়ী যে প্রতিষ্ঠান কাজ পাবে তাদেরকে কাজ দেওয়া হয়। আমাদের রুলস অনুযায়ী যে প্রতিষ্ঠান কাজ পাই না, মাঝেমধ্যে তাদের এরকম অভিযোগ করে থাকে।
এরকম কোন সুযোগ নাই যে, আমার পছন্দ মত বা পছন্দের লোককে যদি বলি আপনি কাজ গুলো করে দেন, এটা তো কোন অবস্থায় হয় না বা সম্ভবও না। কাজের রুলস বা নিয়ম অনুযায়ী লটারিতে যে প্রতিষ্ঠান কাজ পায়, তাকে কাজ দিয়ে থাকি।