অনলাইন ডেস্কঃ
সারাজীবন যে প্রতিষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নিজের কর্মকাণ্ড আর ভাবনাকে তৃণমূলের কাছে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন সেই গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে শেষবারের মতো অগণিত মানুষ ফুল আর সজল চোখে বিদায় দিয়েছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে।
গত শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) সকাল থেকেই সাভারের মির্জানগর এলাকায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পিএইচএ ভবনের মাঠে বৈশাখের তীব্র তাপদাহ উপেক্ষা করে ফুল হাতে তাঁর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলেন শত শত মানুষ৷ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সারিবদ্ধভাবে জনতা তার কফিনে ফুল দিয়ে, নীরবে দাঁড়িয়ে, নতমস্তকে শ্রদ্ধা জানান।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের এই প্রতিষ্ঠাতার পরিবারের সদস্য, প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন আশপাশের সাধারণ মানুষও। তারা এই বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রতি তাদের ভাললাগার কথা, ভালবাসার কথাও স্মৃতিচারণ করেন এসময়।
গণবিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিরাজ আহমেদ শিথিল বলেন, “আমাদের অভিভাবককে হারিয়েছি আমরা। তাঁর মতো মানুষ আর আসবে না। তাঁর মৃত্যুতে গণস্বাস্থ্যের সবাই আজ শোকাহত। আমরা এই শোক কোনোদিনও ভুলতে পারব না।”
সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে জুমার নামাজের পর তার জানাজা হওয়ার কথা। শেষে নিজের হাতে গড়া গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সূচনা ভবনের পাশে সবুজ ছায়ায় তাকে শায়িত করা হবে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে সাভার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে লাশবাহী ফ্রিজার ভ্যানে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মরদেহ আনা হয়।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী রাজধানী ঢাকার ধানমণ্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত মঙ্গলবার রাতে ৮২ বছর বয়সে মারা যান।
তিনি দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর তার লিভারেও সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়া তিনি অপুষ্টিসহ সেপটিসেমিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন বলে জানান চিকিৎসকরা।
গত ৩ এপ্রিল নগর হাসপাতালে ভর্তির পর সেখানেই তার চিকিৎসা চলছিল। গত রবিবার তার শারীরিক অব্স্থার উন্নতি না হলে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে তাঁকে সোমবার ‘লাইফ সাপোর্টে’ নেওয়া হয়।
এরপর মঙ্গলবার সকালে মেডিকেল বোর্ড বসে তার রক্তে সংক্রমণ পাওয়ার কথাও জানায়। দুপুরে কিডনি ডায়ালাইসিস শুরু করা হলেও রাতেই আসে তাঁর মৃত্যুর খবর।