চট্টগ্রামঃ
চীনা সেনাবাহিনী কর্তৃক পূর্ব তুর্কিস্তানে ১৯৯০ সনের ৫ এপ্রিল হতে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত গণহত্যা ও নিপীড়নের শিকার নিরীহ লাখো মুসলিম নরনারীর শাহাদাতবার্ষিকী ঐতিহাসিক বারেন বিপ্লব দিবস স্মরণে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট চট্টগ্রাম জেলা গতকাল ৫ এপ্রিল বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব বঙ্গবন্ধু হলে স্মরণসভার আয়োজন করে।
নগর দক্ষিণ ইসলামী ফ্রন্টের সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ নূরুল ইসলাম জেহাদীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ইসলামী ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান মাওলানা এম এ মতিন।
মুখ্য আলোচক ছিলেন ইসলামী ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মাওলানা স উ ম আবদুস সামাদ।
প্রধান অতিথি এম এ মতিন বলেন, সাম্রাজ্যবাদী অপশক্তি আজ দেশে দেশে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। চীনসহ নানা দেশে যুগ যুগ ধরে চলছে মুসলিম নিপীড়ন ও গণহত্যা। তেমনি ১৯৯০ সনের ৫ এপ্রিল থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত পূর্ব তুর্কিস্তানে অবৈধভাবে প্রবেশ করে চীনা সেনাবাহিনী জঘন্য বর্বরতা ও গণহত্যা চালিয়েছে লাখো মুসলিম নর-নারী ও শিশুদের ওপর।
পূর্ব তুর্কিস্তান ও উইঘুরোতে মুসলিম নিধনযজ্ঞে মেতে উঠার কারণে চীন আজ বিশ্বে ধিকৃত ও নিন্দার পাত্র হয়ে উঠেছে। চীনা সেনারা হাজার হাজার নারীকে বন্দুকের মুখে গর্ভপাত ঘটিয়েছে।
অস্ত্র ব্যবসা চাঙা রাখতে ও ক্ষমতার দম্ভ জাহির করতে দেশে দেশে যুদ্ধ সংঘাত ছড়িয়ে দিচ্ছে সাম্রাজ্যবাদী মোড়ল দেশগুলো। তাদের এ অপকর্ম প্রভাব খাটিয়ে বিশ্ব মিডিয়ায় চেপে রাখা হচ্ছে। ফলে বিশ্ববাসী তেমন কিছু জানতে পারছেনা।
চীনসহ দেশে দেশে চলা সম্রাজ্যবাদী দেশগুলোর বর্বরতা ও গণহত্যা থামাতে জাতিসংঘসহ বৈশ্বিক সংস্থাগুলোকে জোরালো আইনগত পদক্ষেপ নিতে হবে। এম এ মতিন বলেন, ৫ এপ্রিল ঐতিহাসিক বারেন বিপ্লব দিবসের চেতনা ও শিক্ষাই হলো সাম্রাজ্যবাদী অপশক্তিকে প্রতিহত করা। তাদের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা।
বিশ্বের শান্তিকামী মানুষ আজ জেগে উঠেছে। সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আজ বৈশ্বিক জাগরণ ও প্রতিরোধ শুরু হয়ে গেছে। তারা আর নিস্তার পাবে না। তিনি বাংলাদেশ সরকারকে চীনসহ দেশে দেশে চলা মুসলিম গণহত্যার বিরুদ্ধে নিন্দা জানানোর আহ্বান জানান এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধে বিশ্ব নেতৃত্বকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
মুখ্য আলোচক স উ ম আবদুস সামাদ বলেন, বিশ্বের মোড়ল বড় দেশগুলো মানবাধিকারের সবক দেয়। অথচ ওই দেশগুলোতেই বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। চীনের মতো দেশে সংখ্যালঘু মুসলমানরা গণহত্যা ও নিপীড়নের শিকার। তা খুব একটা গণমাধ্যমে আসে না।
ফলে গণহত্যা ও নিপীড়ন চালিয়েও ওরা পার পেয়ে যাচ্ছে। ৫ এপ্রিল ঐতিহাসিক বারেন বিপ্লব তথা গণহত্যা দিবস সকল দেশকে পালনের মাধ্যমে চীনসহ সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিরোধের বলয় গড়তে হবে। সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোর মুখোশ উন্মোচিত করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা নূরুল ইসলাম জেহাদী বলেন, মুসলমানরা শান্তিপ্রিয় জাতি। মুসলমানরা সব সময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সহাবস্থানে বিশ্বাসী। অথচ তারাই আজ সব দেশে নিপীড়নের শিকার।
শান্তিপ্রিয় মুসলমানদের জানমাল রক্ষায় বৈশ্বিক সংস্থাগুলোকে পদক্ষেপ নিতে হবে।
প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক মাস্টার মুহাম্মদ আবুল হোসাইনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা’আত বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান আল্লামা কাজী মুঈন উদ্দিন আশরাফী, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট আবু নাছের তালুকদার, এম. সোলায়মান ফরিদ, অধ্যক্ষ মাওলানা মুফতি আহমদ হোসাইন আল কাদেরী, অধ্যক্ষ আবু তালেব বেলাল, যুগ্ম মহাসচিব আব্দুর রহিম, মাওলানা রেজাউল করিম তালুকদার, এম. এ মাবুদ, ইঞ্জিনিয়ার নূর হোসেন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সচিব মুহাম্মদ এনামুল হক ছিদ্দিকী, এম মহিউল আলম চৌধুরী, ইসলামী ফ্রন্ট উত্তর জেলার সভাপতি মাওলানা ওবাইদুল মোস্তফা কদমরসূলী।
মাওলানা আব্দুন নবী আল কাদেরী, মাওলানা ইউনুস তৈয়বি, মুহাম্মদ আলী হোসাইন, ফেরাকানুল আলম চৌধুরী, মাওলানা ইয়াছিন হোসাইন হায়দরী, নাছির উদ্দিন মাহমুদ, মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম, মাওলানা নূরুল্লাহ রায়হান খান, মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন, মাওলানা সৈয়দ শামসুল ইসলাম আজমী, যুবসেনার সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মুহাম্মদ আবু আজম, ইব্রাহিম খলিল, আজিম উদ্দিন জনি, মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন, ছাত্রসেনার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল জাবের, মুহাম্মদ শাহেদুল আলম, কাজী মুহাম্মদ আরাফাত, মুহাম্মদ নুর রায়হান চৌধুরী, মুহাম্মদ নূরউদ্দিন, মুহাম্মদ বেলাল কাদেরী, প্রমুখ।
সালাত সালাম শেষে দেশ, বিশ্ববাসীর শান্তি কল্যাণ ও বিশ্বের নিপীড়িত মানবতার পরিত্রাণ কামনায় মুনাজাত করেন শায়খুল হাদিস আল্লামা কাজী মুঈন উদ্দীন আশরাফী।
ইসলামী ফ্রন্ট, ছাত্রসেনা ও যুবসেনার হাজারো নেতাকর্মী স্মরণসভায় অংশগ্রহণ করেন।