অনলাইন সময় ডেস্কঃ
আগের দুই শর্তেই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়িয়েছে সরকার।আগের মতো এবারও এই মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ছয় মাসের জন্য। এ নিয়ে ষষ্ঠ দফায় তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ল।
গতকাল রবিবার (২৬ মার্চ) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে এই সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হয় বলে নিশ্চিত করেছেন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপু।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, এবারও শর্ত রয়েছে খালেদা জিয়াকে নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে এবং এই সময়ে তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা নিয়ে কারাগারে গিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। ওই বছরের অক্টোবরে হাইকোর্টে আপিল শুনানি শেষে সাজা বেড়ে হয় ১০ বছর।
এরপর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও আরও সাত বছরের সাজা হয় বিএনপি নেত্রীর। তিনি তখনও পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন সড়কের কারাগারে ছিলেন।
দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর পরিবারের আবেদনে ২০২০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করে খালেদার দণ্ড স্থগিত করেন ছয় মাসের জন্য।
এরপর ওই বছরের ২৫ মার্চ খালেদা জিয়া মুক্তি পাওয়ার পর থেকে গুলশানে তার বাড়িতে রয়েছেন। মাঝে অসুস্থতার জন্য কয়েক দফায় হাসপাতালেও কিছু দিন ছিলেন তিনি।২০২০ সালে ছাড়া পাওয়ার পর থেকে প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ছে। সর্বশেষ গত ৬ মার্চ নতুন আবেদন করেন তার ভাই শামীম এস্কেন্দার।
খালেদার ভাইয়ের আবেদন পাওয়ার পর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। সেটার সময় শেষ হয়ে আসছিল, যার জন্য তারা (পরিবার) আবেদন করেছিলেন। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা তাকে আগের মতো দু’টি শর্তসাপেক্ষে মুক্তির মেয়াদ ৬ মাসের জন্য বৃদ্ধির সুপারিশ করেছি।”
শর্তের বিষয়ে আনিসুল হক বলেন, “শর্তগুলো হলো তিনি ঢাকায় নিজের বাসায় থেকে তার চিকিৎসা গ্রহণ করবেন। তিনি হাসপাতালে যেতে পারবেন না, তা নয়। তিনি হাসপাতালে যেতে পারবেন। উক্ত সময় তিনি দেশের বাইরে গমন করতে পারবেন না।”
শর্তসাপেক্ষে মুক্ত খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ নিয়ে নির্বাচনের আগের বছর সম্প্রতি আলোচনা উঠে।বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণে বাধা নেই বলে আইনমন্ত্রী মত জানালেও বিপরীত বক্তব্য আসে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছ থেকে।
এর মধ্যে বিএনপি’র পক্ষ থেকে বলা হয়, সরকার বিভ্রান্তি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে অযাচিতভাবেই খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ নিয়ে আলোচনা তুলছে।
৭৫ বছর বয়সী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার আগে থেকে আর্থারাইটিস, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, চোখের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছেন।রায় হওয়া দু’টি ছাড়াও খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আরও ৩৪টি মামলা রয়েছে।