চট্টগ্রামঃ
নগরের চকবাজারে অবস্থিত আবাসিক এলাকা দেবপাহাড়। সহজ যোগাযোগ, স্বনামধন্য শিক্ষাকেন্দ্রসহ সকল নাগরিক সুবিধাদির নৈকট্যের জন্য পরিচিত। কিন্তু সুনির্দিষ্টভাবে তেমন কোনো পরিকল্পনা বা সঠিক ব্যবস্থাপনা না থাকায় এলাকাটি তার ঐতিহ্যগত মূল্যায়ন পায়নি কোনো কালেই। একে ঘিরে ছিলো এক ধরনের নেতিবাচক মনোভাব।
উন্মুক্ত ও অরক্ষিত প্রবেশপথ, খোলা ড্রেন, যত্রতত্র ময়লা আবর্জনার ছড়াছড়ি, অবিন্যস্ত ফুটপাত ইত্যাদি পারিপার্শ্বিকতা ঐতিহ্যবাহী এই এলাকাটির জৌলুশ মলিন করে রেখেছিলো এতদিন। সন্ধ্যা নামতেই অন্ধকার হয়ে যাওয়া রাস্তাঘাট, রাত বাড়তেই নিরাপত্তাহীনতা জেঁকে বসতো এলাকাবাসীর মনে।
এমন প্রেক্ষাপটে দেবপাহাড়ে আগমন ঘটে চট্টগ্রামের বিখ্যাত নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিপিডিএল এর। ৭১ কাঠা ভূমির উপর নির্মীয়মান, ৪০টিরও অধিক লাইফস্টাইল ফ্যাসিলিটি নিয়ে পরিকল্পিত ও সুনিরাপদ চট্টগ্রামের প্রথম গ্রীন গেইটেড কমিউনিটি ‘সুলতানা গার্ডেনিয়া’ নির্মাণকালে তারা পর্যবেক্ষণ করেন এখানকার অসুবিধা ও সীমাবদ্ধতাসমূহকে।
এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা পর্যালোচনা করে স্বেচ্ছায় তারা উদ্যোগী হন, শুরু হয় এলাকাটিকে বদলে দেয়ার মহা কর্মযজ্ঞ।
সুরম্য প্রধান ফটক নির্মাণ, সাথে নিরাপত্তা প্রহরীদের জন্য নির্ধারিত গার্ড পোস্ট এবং সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সিসিটিভি ক্যামেরা, সুসংহত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি, উন্মুক্ত ড্রেনের উপর সুপরিকল্পিত বাঁধানো ফুটপাত, রকমারি বৃক্ষ আচ্ছাদিত সড়কদ্বীপ বানিয়ে আলোকসজ্জা, ‘সুখময় শৈশব’ শিরোনামে দেয়ালচিত্রসহ সিপিডিএল–এর বিভিন্ন জনকল্যানমুখী এবং উন্নয়নমূলক কাজ বদলে দিয়েছে পুরো দেবপাহাড় এলাকার রূপ।
গড়ে উঠেছে সবুজ ঐতিহ্যে অনন্য দেবপাহাড়। গতকাল শনিবার সিপিডিএল–এর উদ্যোগে বদলে যাওয়া দেবপাহাড় এলাকার প্রধান ফটক এবং সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ।
উপস্থিত ছিলেন সিপিডিল সুলতানা গার্ডেনিয়া প্রকল্পের ভূমি মালিক ব্যারিস্টার কামাল উল আলম, ১৬ নম্বর চকবাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. নুর মোস্তফা টিনু, সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুমকি সেনগুপ্ত, সিপিডিএল এর প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার ইফতেখার হোসেন এবং সিপিডিএল পরিবারের অন্যান্য সদস্যবৃন্দসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
অনুষ্ঠানে দেবপাহাড় এলাকার উন্নয়নমূলক কাজের আলোচনার পাশাপাশি নগরের জাকির হোসেন রোডের সবুজায়ন এবং সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের নকশা এবং প্রস্তাবনা হস্তান্তর করা হয়।
সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী সিপিডিএল সুলতানা গার্ডেনিয়া ও দেবপাহাড় প্রকল্পের সামগ্রিক ধারণা এবং সোশ্যাল হ্যাপিনেস কার্যক্রমকে একটি ব্যতিক্রমী এবং অসাধারণ উদ্যোগ উল্লেখ করে এর প্রশংসা করেন।
এছাড়াও জাকির হোসেন রোডের সবুজায়ন এবং সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের নকশা এবং প্রস্তাবনা গ্রহণের পাশাপাশি সৌন্দর্যবর্ধনে সিটি কর্পোরেশনের নানামুখী উদ্যোগে সিপিডিএলকে সবসময় পাশে পাওয়ায় ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, শহরে সিপিডিএ যে কাজ করছে তাতে সত্যিকার অর্থে নান্দনিক শহর হয়েছে।
সিডিএ চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, শুধুমাত্র দেবপাহাড় নয়, ইতোমধ্যে নগর উন্নয়নে সিপিডিএল যে পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করেছে প্রতিটি কাজই প্রশংসার দাবিদার এবং তারা প্রতিটি প্রকল্পে নানামুখী নতুনত্ব নিয়ে আসছে যা শহরের মানুষকে সবুজায়নের সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে।
সিপিডিএল এর প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার ইফতেখার হোসেন বলেন, দেবপাহাড় এলাকায় সবুজায়ন এবং সৌন্দর্যবর্ধনে প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়ন করতে পেরে সিপিডিএল পরিবার আনন্দিত। ব্র্যান্ডিং চট্টগ্রাম কনসেপ্ট এর কথা উল্লেখ করে নগরের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় সিপিডিএল ভবিষ্যতে আরও জনমুখী উদ্যোগে চসিকের পাশে থাকবে বলে তিনি প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সিপিডিল সুলতানা গার্ডেনিয়া প্রকল্পের ভূমি মালিক ব্যারিস্টার কামাল উল আলম বলেন, দেবপাহাড়ের নৈসর্গিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে নতুন মাত্রা যোগ করেছে আবাসন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান সিপিডিএল। এই এলাকার প্রতিটি জায়গাকে তারা অনন্য এক শৈল্পিক রূপ দিয়েছে।
অনুষ্ঠান শেষে অতিথিরা সিপিডিএল সুলতানা গার্ডেনিয়া প্রকল্প এবং দেবপাহাড়ে সিপিডিল–এর উন্নয়নমূলক কাজ সরেজমিনে পরিদর্শন করেন এবং ভূয়সী প্রশংসা করেন। অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির চিফ বিজনেস অফিসার জিয়াউল হক খান সিপিডিএল সোশ্যাল হ্যাপিনেস কার্যক্রমের বিভিন্ন সময়ের উল্লেখযোগ্য কাজের চিত্র তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে হলেও প্রতিটি ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানের উচিত সমাজের উন্নয়নে এবং পরিবেশের কল্যাণে তাৎপর্যময় কিছু করা।