আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত–আইসিসি; তবে সেটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ ছাড়া আর কিছু নয়।
জাতিসংঘের দৃঢ় বিশ্বাস, ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের জন্য রুশ নেতাকে অভিযুক্ত করার যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। তবে এ ধরনের মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে বাস্তব ও যৌক্তিক জটিলতার শেষ নেই।
ফলে পুতিনকে আসলেই বিচারের মুখোমুখি করা যাবে কিনা, কী কী সংকট রয়েছে, সেইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে জারি করা আইসিসির পরোয়ানা ইউক্রেন যুদ্ধেই বা কতটুকু প্রভাব ফেলবে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুতিন এখন নিজ দেশে নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী, ফলে তাকে আইসিসির কাছে ক্রেমলিনের হস্তান্তরের কোনো সম্ভাবনা নেই। যতদিন তিনি রাশিয়ায় থাকবেন, ততদিন গ্রেপ্তার হওয়ার ঝুঁকি নেই। রাশিয়ার বাইরে গেলে পুতিন আটক হতে পারেন। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞায় তার চলাফেরা ইতোমধ্যে সীমিত হয়ে গেছে।
তাই যে দেশ তাকে বিচারের আওতায় আনতে চায়, সেখানে পুতিনকে পাওয়ার সম্ভাবনা কম। তাছাড়া রাশিয়া আইসিসির এখতিয়ার বা কর্তৃত্বকে স্বীকৃতি দেয় না। ফলে এর আদেশ কেবল সেসব দেশের জন্যই খাটে, যারা ওই চুক্তিতে সই করেছিল।
আইসিসি গঠনের চুক্তিতে রাশিয়া সই না করায় সংস্থাটির পরোয়ানায় রাশিয়া থেকে কাউকে প্রত্যর্পণের বাধ্যবাধকতাও দেশটির নেই। আবার এই পরোয়ানাকে স্বাগত জানানো ইউক্রেনসহ কয়েকটি দেশ চুক্তিতে সই করেছে, তবে অনুসমর্থন দেয়নি এখনও।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে, পুতিনের বিপক্ষে আইনি অবস্থান নড়বড়ে। আইসিসি বলেছে, ইউক্রেইনে যুদ্ধাপরাধ অব্যাহত রয়েছে। পরোয়ানার মাধ্যমে এ ধরনের অপরাধ ঠেকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু এতে রাশিয়া প্রতিক্রিয়া হল, এই পরোয়ানা অর্থহীন।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ধরনের অবাধ্যতার পরিস্থিতিতে আইসিসির পদক্ষেপ ইউক্রেনে যুদ্ধের উপর কোনো প্রভাব ফেলবে বলে মনে হয় না। সেইসঙ্গে পুতিনের ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ নির্দয়ভাবে মানুষকে পিষে যেতে যাবে।
ন্যায্য অভিযোগ, পুতিন যুদ্ধাপরাধ করেছেন: এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন স্পষ্টতই যুদ্ধাপরাধ করেছেন এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) তার বিরুদ্ধে যে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে তা ন্যায্য। পুতিনকে ইঙ্গিত করে সাংবাদিকদের বাইডেন বলেন, তিনি স্পষ্টতই যুদ্ধাপরাধ করেছেন।
আমার মনে হয় (গ্রেপ্তারি পরোয়ানা) ন্যায্য। কিন্তু বিষয় হচ্ছে, আমরা বা রাশিয়া কেউই ওই আদালতকে স্বীকৃতি দেইনি, কিন্তু আমি মনে করি এই পরোয়ানা একটি শক্তিশালী পয়েন্ট দাঁড় করিয়েছে।