সীতাকুণ্ড প্রতিনিধিঃ
সীতাকুণ্ডে বেদখল হওয়ার ৮ বছর পর মালিককে কয়েক কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তি বুঝিয়ে দিলেন আদালত। গতকাল বুধবার উপজেলার ভাটিয়ারী অক্সিজেন রোড সাগর উপকূলে অবস্থিত জায়গাটি আদালতের নির্দেশে জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট সশরীরে উপস্থিত হয়ে মালিককে বুঝিয়ে দেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের দিকে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী অক্সিজেন রোডস্থ সাগর উপকূলবর্তী শিপইয়ার্ডে অবস্থিত জনৈক নুরুল ইসলামের মালিকানাধীন ১৫.৮৪ শতক জায়গা (সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, ভাটিয়ারী শাখায় বন্ধক থাকা) অর্থ ঋণ আদালত নিলামে বিক্রি করলে তা ক্রয় করেন স্থানীয় ইসমাঈল স্টিল এন্টারপ্রাইজের এমডি লায়ন মোহাম্মদ ইমরান।
সেই থেকে তিনি জায়গাটিতে শিপব্রেকিংসহ কার্যক্রম পরিচালনা করলেও ২০১৫ সালের দিকে পার্র্শ্ববর্তী ইয়ার্ড মালিকরা জায়গাটি দখল করে নেন। পরবর্তীতে এ জায়গা ফিরে পেতে আদালতের দ্বারস্থ হন মোহাম্মদ ইমরান। সেই থেকে দীর্ঘ ৮ বছর আইনি প্রক্রিয়া শেষে মোহাম্মদ ইমরান জায়গার মালিকানা বিষয়ে তার পক্ষে রায় পেলে আদালত জায়গাটি প্রকৃত মালিককে বুঝিয়ে দিতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেন।
সেই নির্দেশ পেয়ে গতকাল আদালতের নির্দেশে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হুছেইন মোহাম্মদ জায়গাটির অবস্থান চিহ্নিত করে তাতে খুঁটি পুঁতে সাইনবোর্ড ও পতাকা দিয়ে জায়গার মালিক মোহাম্মদ ইমরানকে পুনরায় বুঝিয়ে দেন। এসময় আদালতের প্রতিনিধি, কোর্ট পুলিশ, সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ, স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদকর্মীসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হুছেইন মোহাম্মদ বলেন, আদালতে জায়গা নিয়ে মামলা চলছিল। মামলা শেষে আদালত মোহাম্মদ ইমরানকে তার জায়গাটি বুঝিয়ে দিতে নির্দেশ দিলে আমরা আজ এখানে এসেছি বুঝিয়ে দিতে। মূলত এখানে যেন কোন আইন–শৃঙ্খলার অবনতি না হয় সেটি দেখাই আমাদের কাজ।
এদিকে দীর্ঘ ৮ বছর পর আদালতের মাধ্যমে বেদখল হয়ে যাওয়া কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি ফেরত পাওয়ায় আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মোহাম্মদ ইমরান বলেন, ২০১৫ সালে পার্শ্ববর্তী ইয়ার্ড মালিকরা রাতের আঁধারে জায়গাটি দখল করে নেয়। তারা যখন জায়গাটি দখল করেছে তখন আমরাও সেখানে মারামারি হানাহানি করতে পারতাম।
কিন্তু এতে আইন হাতে নেয়া হতো। যা শোভনীয় নয়। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই আদালতের দ্বারস্থ হই। শেষ পর্যন্ত আদালত আমার পক্ষে রায় দিয়ে জায়গাটি বুঝিয়ে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমার কাছ থেকে আট বছর আগে যখন ইয়ার্ডটি জোর করে দখল করে নেয়া হয়েছিল তখন সেখানে প্রচুর স্ক্র্যাপ প্লেট এবং বিভিন্ন ধরণের ইকুইপমেন্ট ছিল। প্রাথমিক হিসেবে প্রায় ১৮ কোটি টাকার লোহা থাকার কথা উল্লেখ করে লায়ন মোহাম্মদ ইমরান বলেন, দখলকারীরা উক্ত লোহা পুরোপুরি আত্মসাত করেছে।
ইয়ার্ডের বিভিন্ন ইকুইপমেন্ট নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। কোন কোনটি সরিয়ে ফেলেছে। তিনি কোটি কোটি টাকা ক্ষতির মুখে পড়েও আইনি লড়াইয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।