চট্টগ্রামের সময় ডেস্কঃ
সারা দেশে আজ সোমবার পালিত হচ্ছে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন। ক্যাম্পেইনের আওতায় সারা দেশের পাশাপাশি চট্টগ্রামেও ৬–৫৯ মাস বয়সী প্রায় সাড়ে ১৩ লাখ শিশুকে একটি করে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এর মধ্যে ৬–১১ মাস বয়সীদের একটি করে নীল রঙের (১ লাখ ইউনিট)
এবং ১২–৫৯ মাস বয়সী শিশুদের একটি করে লাল রঙের (২ লাখ ইউনিটের উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন) ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। তবে জোর করে বা কান্নারত অবস্থায় শিশুদের ভিটামিন এ ক্যাপসুল না খাওয়াতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা রয়েছে।
এছাড়া ছয় মাসের কম বয়সী ও ৫ বছরের বেশি বয়সী এবং অসুস্থ শিশুকে এই ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী ও চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সপ্তাহব্যাপী বা চারদিনব্যাপী জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন পালন
করা হলেও এবার মাত্র একদিন এ ভিটামিন ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে জটলা বা বেশি মানুষের ভিড় এড়াতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে একাধিক দিনে এ ক্যাম্পেইন পালন করা হয় বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। তবে সংক্রমণ পরিস্থিতি উন্নত হওয়ায় এবার একদিনে এ ক্যাম্পেইন পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় ও চসিকের স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, মহানগরসহ চট্টগ্রাম জেলায় ৬–৫৯ মাস বয়সী সব মিলিয়ে ১৩ লাখ ৪০ হাজার ৫৬৪ শিশুকে এবার ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মাঝে ৬–১১ মাস বয়সী ১ লাখ ৭২ হাজার ৯১৮ জন ও ১২–৫৯ মাস বয়সী ১১ লাখ ৬৭ হাজার ৬৪৬ জন শিশু রয়েছে।
চসিকের স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মহানগরের ৪১টি ওয়ার্ডে ৫ লাখ ৩৬ হাজার শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এর মাঝে ৬–১১ মাস বয়সী ৮১ হাজার এবং ১২–৫৯ মাস বয়সী শিশুর সংখ্যা ৪ লাখ ৫৫ হাজার।
অন্যদিকে জেলার ১৫টি উপজেলায় মোট ৮ লাখ ৪ হাজার ৫৬৪ জন শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়া জানান, লক্ষ্যমাত্রার আওতায় ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী শিশুর সংখ্যা ৯১
হাজার ৯১৮ জন এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুর সংখ্যা ৭ লাখ ১২ হাজার ৬৪৬ জন। জেলার ১৬টি স্থায়ী ও ৪ হাজার ৮০০টি অস্থায়ী কেন্দ্রে এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
নির্দিষ্ট কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। ক্যাম্পেইন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করার কথা জানিয়েছেন চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন।
সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, এ ক্যাপসুল খেলে শিশুদের সমস্যা হয় না। তবে খালি পেটে খেলে বমি বমি ভাব হতে পারে। এজন্য শিশুদের ভরা পেট অবস্থায় ক্যাপসুলটি খাওয়াতে হয়। তবে কোনো শিশু গত চার মাসের মধ্যে এ ক্যাপসুল খেলে তাকে আর খাওয়ানো যাবে না। এছাড়া
অসুস্থ এবং ৬ মাসের কম বয়সী ও পাঁচ বছরের বেশি বয়সী শিশুকে এ ক্যাপসুল খাওয়ানো যাবে না।
রাতকানা রোগের প্রাদুর্ভাব কমিয়ে আনা ও শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে অপুষ্টিজনিত মৃত্যু প্রতিরোধ করাই ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের অন্যতম উদ্দেশ্য বলে জানান চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী।