আন্তর্জাতিক অনলাইন ডেস্কঃ
তুরস্ক–সিরিয়ায় স্মরণকালের ভয়াবহ ভূমিকম্পের আঘাতে নাগরিকদের মৃত্যুর সংখ্যা ২৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান গতকাল এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, তার দেশে এখন পর্যন্ত ২১ হাজার ৮৪৮ টি মরদেহ পাওয়া গেছে।
তুরস্ক থেকে মৃতের নতুন সংখ্যা জানা গেলেও সিরিয়ায় এখন পর্যন্ত কয়টি মরদেহ পাওয়া গেছে, সে তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ভূমিকম্পে মোট ৩ হাজার ৫১৩ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে।
এর মধ্যে সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকায় মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৩৪৭ জন ও বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত উত্তর ও উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় নিহত হয়েছে ২ হাজার ১৬৬ জন। তুরস্কে ভূমিকম্পের ঘটনায় ৮০ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। সিরিয়ার কতজন আহত হয়েছে তার নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা জানা যায়নি।
তুরস্কে ধসে পড়া ভবনের কংক্রিটের স্তূপের মধ্যে গতকাল শনিবার উদ্ধারকর্মীদের উদ্ধারকাজ চালাতে খুব সামান্যই দেখা গেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। যদিও সড়কে বেশ কিছু ট্রাকে করে ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে নিতে দেখা গেছে।
ভূমিকম্পে এতো মানুষের প্রাণহানির কারণে এখন এরদোয়ান সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ভূমিকম্পের পর তাৎক্ষণিক সাড়া দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তুরস্কে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৭ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকেতাই।
দেশটির ভূমিকম্প দুর্গত এলাকায় ৩১ হাজার উদ্ধারকর্মী কাজ করছেন বলেও জানান তিনি। হাসপাতালে প্রায় ৮০ হাজার মানুষের চিকিৎসা চলছে। ১০ লাখের বেশি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। যাদের অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র আশ্রয় নিতে হয়েছে।
ভূমিকম্পের পাঁচদিন পর গতকাল হাতাইয়ের আনতাকিয়া থেকে ১৩ বছরের কিশোর আর্দা কান ওভুনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
তুরস্কে ৬৮ দেশ থেকে অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল কাজ করছে। আরও ১৩টি দেশ অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল পাঠাতে চাইছে। থেকে ৯৯ টি দেশ সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে। ৮ হাজার ৩২৬ জন স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছে বিভিন্ন প্রদেশ ও শহরে। এ কার্যক্রমে অংশ নিতে আরও ১৫৬৩ জন ইচ্ছুক।
সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত উত্তর ও উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকায় অনুসন্ধান ও উদ্ধারকাজে করছে বেসামরিক উদ্ধারকারী দল হোয়াইট হেলমেটস। সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকায় দেশি–বিদেশি বহু মানুষ কাজ করছে। হোয়াইট হেলমেটস অবশ্য জানিয়েছে, তাদের অনুসন্ধান ও উদ্ধার কার্যক্রমের আওতাধীন এলাকায় আর কোনো মৃত মানুষ নেই। যারা আহত হয়েছেন তাদের সেবা দেওয়া হচ্ছে।
নিখোঁজদের সন্ধান চলমান থাকবে। তুর্কি কর্তৃপক্ষ ও সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসও বলছে, দুই দেশে এখনও কয়েক হাজার মানুষ নিখোঁজ আছেন। তাদের উদ্ধারে তল্লাশি ও উদ্ধার তৎপরতা চালু রাখবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।