চট্টগ্রামের সময় ডেস্কঃ
দেশের ভবিষ্যতের ‘পাওয়ার অ্যান্ড পোর্ট হাব’ হিসেবে গড়ে উঠতে যাওয়া মাতারবাড়ী বন্দরের চ্যানেল সম্প্রসারণের কাজ অচিরেই শুরু হচ্ছে। এই বন্দরের উন্নয়নে ইতোমধ্যে ২৮৭ একর ভূমি বন্দর কর্তৃপক্ষ অধিগ্রহণ করেছে। ভূমি উন্নয়নসহ এই বন্দরের ড্রয়িং ও ডিজাইন তৈরির কার্যক্রম চলছে।
চ্যানেল সম্প্রসারণসহ আনুষাঙ্গিক কার্যক্রম দ্রুত শেষ করে বন্দরটিকে পুরোদমে চালু করার লক্ষ্য নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে সরকার।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে নির্মাণাধীন বন্দরটির সার্বিক অবস্থা পরিদর্শন করতে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি আজ রোববার মাতারবাড়ি যাচ্ছে। কমিটির পক্ষ থেকে মাতারবাড়ি বন্দর নির্মাণ কাজের সার্বিক পরিস্থিতি পরিদর্শন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হবে।
সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরকালে ওই দেশের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের বিষয়ে বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট (বিগ–জি) ইনিশিয়েটিভ ঘোষণা করা হয়। ওই ঘোষণার প্রেক্ষিতে কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে গ্রহণ করা হয় একটি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প।
জাইকার সহযোগিতায় মাতারবাড়ী ও ঢালঘাটা ইউনিয়নের ১ হাজার ৪১৪ একর জমিতে এ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। ২০১৮ সাল থেকে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ চলছে।
মাতারবাড়ীকে একটি হাব হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে সংশ্লিষ্টরা জানান, মাতারবাড়ীতে ইতোমধ্যে আড়াইশ মিটার প্রস্থ এবং ১৪.৩ কিলোমিটার দীর্ঘ চ্যানেল তৈরি করা হয়েছে। এই চ্যানেলকে পাশে আরো ১০০ মিটার বাড়িয়ে গভীর সমুদ্র বন্দর করা হবে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে মাতারবাড়ীতে বন্দর উন্নয়নের কার্যক্রম শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিপিজিসিবিএল) তৈরি করা ২৫০ মিটার প্রস্থের চ্যানেলকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ১০০ মিটার বাড়িয়ে সাড়ে ৩শ মিটারের একটি চ্যানেল তৈরি করার প্রকল্প গ্রহণ করে।
৩৫০ মিটার প্রস্থ ওই চ্যানেলে ১৮ মিটার ড্রাফট কিংবা ল্যান্থের জাহাজ বার্থিং নিতে পারবে। বন্দর কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে চ্যানেল সম্প্রসারণসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের জন্য ২৮৭ একর জমি অধিগ্রহণ করেছে। তৈরি করা হয়েছে ডিজাইন ও ড্রয়িং। সবকিছু ঠিকমতো এগোলে আগামী কিছুদিনের মধ্যে চ্যানেল সম্প্রসারণের কার্যক্রম শুরু হবে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, মাতারবাড়ী বন্দরের প্রাথমিক উন্নয়ন কার্যক্রম ২০২৫ সালের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। এখন যে বন্দরটিতে শুধুমাত্র কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জাহাজগুলো ভিড়ছে সেখানে একদিন দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জাহাজগুলো নোঙর করবে।
বন্দর নির্মাণ কার্যক্রমের সর্বশেষ অবস্থা পরিদর্শন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদানের জন্য নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেজর (অব) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপির নেতৃত্বে সংসদীয় কমিটি আজ সকালে মাতারবাড়ী যাবে।
কমিটির সদস্য এম এ লতিফ এমপি, রনজিত কুমার রায় এমপি, আসলাম হোসেন সওদাগর এমপি, এস এম শাহাজাদা এমপি, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়াল এডমিরাল এম শাহজাহানসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের আজ মাতারবাড়ী পরিদর্শন করার কথা রয়েছে।