কাপ্তাই প্রতিনিধিঃ
পাহাড়ি আনারস বিক্রি করে স্বাবলম্বী হয়েছেন রাঙামাটির মেয়ে মিনু রানী চাকমা। আনারস বিক্রির টাকায় চলছে দুই সন্তানের লেখাপড়া, ঘুরছে সংসারের চাকা। তার মেয়ে চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে।
ছেলে পড়ছে নবম শ্রেণিতে। তিনি নিজেও কিছু লেখাপড়া শিখেছেন। তবে চাকরির পেছনে না ঘুরে প্রতি সিজনে মিনু আনারসের ব্যবসা করেন। রাঙামাটির বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ এলাকায় চলে যান আনারসের বোঝা নিয়ে। ব্যবসার কাজে তাকে সহযোগিতা করেন স্বামী।
সম্প্রতি রাঙামাটি পর্যটন এলাকায় কাপ্তাই লেকে ভাসমান ইঞ্জিন বোটে মিনুকে আনারস বিক্রি করতে দেখা যায়। এসময় মিনুর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, রাঙামাটির প্রত্যন্ত এলাকা থেকে বিক্রির জন্য আনারস সংগ্রহ করে আনেন।
তার মধ্যে রয়েছে জেলার বাঘাইছড়ি, লংগদু, বরকল, জুরাছড়ি ও বিলাইছড়ি। পরে সংগৃহীত আনারস রাঙামাটির বিভিন্ন পর্যটন এলাকা ও জনসমাগম পয়েন্টে বিক্রি করেন।
মিনু জানান, পাহাড়ে অনেক ধরনের আনারস আছে। সব আনারস পর্যটকরা পছন্দ করেন না। আনারস হৃষ্টপুষ্ট, রসালো এবং মিষ্টি হলে সবাই পছন্দ করে। বিশেষ করে দেখতে যদি ভালো হয় তাহলে ক্রেতা মিলে বেশি। রাঙামাটিতে যত পর্যটক আসেন তারা সবাই কম–বেশি মিনুর কাছ থেকে আনারস কিনেন।
তাদের মধ্যে যেসব পর্যটক প্রাইভেট গাড়ি নিয়ে আসেন তারাই বেশি করে আনারস কিনে নিয়ে যান। মিনু প্রতিটি আনারস ২৫ টাকায় বিক্রি করেন। একজন ক্রেতা একসাথে ১০টি, ২০টি, ৪০টি বা তার চেয়ে বেশি আনারস কিনলেও দাম একই। আনারস খুচরা আর পাইকারি বিক্রির মধ্যে কোনো ফারাক নেই।
মিনু বলেন, অনেক দূর থেকে কষ্ট করে অনেক টাকা খরচ করে আনারস কিনে আনি। দূর–দূরান্ত থেকে ইঞ্জিন বোট ভাড়া করে আনতে হয়। এতে অনেক খরচ পড়ে। পর্যটকরা ছোট এবং দেখতে অসুন্দর আনারস কিনতে চায় না।
ভালো আনারস বেশি দামে কিনতে হয়। সব মিলিয়ে খরচ বাদ দিয়ে প্রতি আনারস বিক্রিতে তার তিন থেকে চার টাকা পর্যন্ত লাভ হয়। গড়ে প্রতিদিন তার দেড় থেকে দুইশ আনারস বিক্রি হয়। মিনু জানান, পর্যটকরাই তার আসল ক্রেতা।