কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ
দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আবারও টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে টেকনাফের দমদমিয়া জেটিঘাট থেকে ৬১০ জন যাত্রী যাত্রা শুরু করে পর্যটকবাহী জাহাজ এমভি পারিজাত ও এমভি রাজহংস।
দুপুর সাড়ে ১২ টায় জাহাজ দুটি দ্বীপে পৌঁছে। এর আগে বৃহস্পতিবার চলতি মৌসুমে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পরীক্ষামূলকভাবে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমোদন দেয় প্রশাসন। সর্বশেষ গত বছরের ৩১ মার্চ এই রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করেছিল। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবু সুফিয়ান জানান, পরীক্ষামূলকভাবে দুইটি জাহাজের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এই দুইটি জাহাজ চলাচলে পরিস্থিতি ইতিবাচক পেলে পরদিন থেকে চলাচলের জন্য অন্যান্য জাহাজগুলোকে অনুমতি দেওয়া হবে। এদিকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চালুর পর পর্যটক বাড়ছে কক্সবাজারে।
গতকাল শুক্রবার সরকারি ছুটির দিনে আগের সপ্তাহের একই দিনের তুলনায় প্রায় ৫০% পর্যটক বাড়ে বলে জানান হোটেল মালিকরা। একইসঙ্গে টেকনাফ-সেন্টমার্টিনের হোটেল-রেস্তোরাঁসহ পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটক বেড়েছে বলে জানান ট্যুর অপারেটররা। সরেজমিনে দেখা যায়, টেকনাফ দমদমিয়া পর্যটকবাহী জাহাজের জেটিঘাটে টিকিটের জন্য ভিড় করেন পর্যটকরা। শতাধিক পর্যটক টিকিট না পাওয়ায় দ্বীপে ভ্রমণে যেতে পারেননি।
জাহাজ মালিক সমিতির সংগঠন স্কোয়াবের সভাপতি তোফায়েল আহমেদ বলেন, অনুমতি পাওয়ায় আজ (শুক্রবার) প্রথম দিন এমভি পারিজাত ও রাজহংস নামের দুটি জাহাজ দমদমিয়া ঘাট থেকে পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে। পরশু থেকে কেয়ারি সিন্দাবাদসহ অনুমতি পাওয়া অন্যান্য জাহাজগুলো চলাচল করবে।
আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো পর্যটকদের উন্নতমানের সেবা দিতে। তবে এবার তেল থেকে শুরু করে সবকিছুর দাম বাড়তি হওয়ায় টিকিটের দাম একটু বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) কক্সবাজার অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মো. হাবিবুর রহমান জানান, কোন জাহাজ যাতে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করতে না পারে সেজন্য আমরা তদারকি করছি।
বাংলাদেশ ট্যুরিজম সার্ভিসেস এসোসিয়েশন কক্সবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, শুক্রবার (গতকাল) সরকারি ছুটির দিনে আগের সপ্তাহের একই দিনের তুলনায় প্রায় ৫০% পর্যটক বেড়েছে কক্সবাজারে। আগের সপ্তাহের শুক্রবার যেখানে কক্ষ বুকিং ছিল ৬৫% এর মতো, সেখানে গতকাল শুক্রবার বুকিং হয়েছে প্রায় ৯৫%।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, কক্সবাজারে পর্যটকেরা যাতে হয়রানির শিকার না হয় তা নিশ্চিত করতে পুলিশের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের বিচকর্মীরা দায়িত্ব পালন করছে। এছাড়া একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পর্যটন এলাকায় ভ্রাম্যমান আদালত সার্বক্ষণিক সক্রিয় রয়েছে। পর্যটক হয়রানির কোন অভিযোগ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।