চট্টগ্রামঃ
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, আমরা চিকিৎসা ব্যবস্থা আরো ভালো করতে চাই, লোকজনকে যাতে বিদেশ না যেতে হয়। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) ২য় আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রী এ কথা বলেন।
ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন মন্ত্রী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. ইসমাইল খান।
‘চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা : বঙ্গবন্ধুর চিন্তা ও দর্শন’ শীর্ষক বঙ্গবন্ধু স্মারক বক্তৃতাও দেন উপাচার্য। সম্মানিত অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের সদ্য নিয়োগ প্রাপ্ত মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক টিটু মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডাইরেক্টর (সিডিসি) প্রফেসর নাজমুল ইসলাম মুন্না, বিএমএ চট্টগ্রামের সভাপতি ডা. মুজিবুল হক খান, চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিকুল হক, অধ্যাপক ডা. ডিপি বড়ুয়া, বিএমএ চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সল ইকবাল চৌধুরী।
চমেক শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মনোয়ার–উল হক শামীমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন, মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ও সম্মেলন কমিটির সভাপতি ডা. অনিরুদ্ধ ঘোষ। বক্তব্য দেন, চমেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. সাহেনা আক্তার। চমেক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. প্রণয় দত্তের সঞ্চালনায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সম্মেলন কমিটির সদস্য সচিব ও গ্যাস্ট্রোএন্ট্রোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এরশাদ উদ্দিন আহমেদ।
অন্যান্যের মাঝে বিএমএ চট্টগ্রামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডা. মোহাম্মদ শরীফ, নিউরো মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. হাসানুজ্জামান, নিউরোসার্জারী বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. নোমান খালেদ চৌধুরী, কার্ডিয়াক সার্জারী বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম খান, মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুর সাত্তার, অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. চন্দন কুমার দাশ, অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান, রেডিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সুভাষ মজুমদার, রেডিওথেরাপি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সাজ্জাদ মোহাম্মদ ইউসুফ, শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. রেজাউল করিম চৌধুরী, নবজাতক বিভাগের প্রধান ডা. মো. শাহীন, অধ্যাপক ডা. বাসনা মুহুরী, হেমাটোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ গোলাম রব্বানী, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যারয় (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়াসহ চমেকের শিক্ষক–চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।
‘শেয়ারিং নলেজ, কেয়ারিং লাইফ’ স্লোগানে ২য় আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক এ সম্মেলন গত বৃহস্পতিবার শুরু হয়। চমেক শিক্ষক সমিতির ব্যবস্থাপনায় চমেক শাহ আলম বীর উত্তম অডিটোরিয়ামে আজ (৩১ ডিসেম্বর) পর্যন্ত এ সম্মেলন চলবে।
গতকালের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রী আরো বলেন, ইন্টারন্যাশনাল এই কনফারেন্সে দেশ–বিদেশের অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা জড়ো হয়েছেন। যারা নিজেদের অভিজ্ঞতা ও অর্জিত জ্ঞান শেয়ার করবেন। এর মাধ্যমে সকলেই আরো সমৃদ্ধ হবেন। জুনিয়র চিকিৎসকরাও লাভবান হবেন।
সংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণে সফলতা পেলেও অসংক্রামক ব্যাধি বাড়ছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলেন, আমার সাজেশন থাকবে, অসংক্রামক ব্যাধি যেমন– হার্টের অসুখ, কিডনি, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, মেন্টাল হেলথ, এসব বিষয়ে আরো বেশি আলোচনা করা দরকার। নলেজ শেয়ারিং বেশি হওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি রিসার্চেও গুরুত্ব দিতে হবে।
আমরা চেষ্টা করছি, হেলথ সেক্টরে আরো ভালো করার। আন্তর্জাতিক এ সম্মেলন ঘিরে চমেক ক্যাম্পাসে দেশি–বিদেশি চিকিৎসকের মিলন মেলা বসেছে। ১ হাজার ২৫০ জন চিকিৎসক এ সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন। এর মাঝে কলকাতার প্রখ্যাত অর্থোপেডিক সার্জন ডা. রাজিব রমনসহ ভারত, আমেরিকা, ইংল্যান্ড ও বাহরাইন থেকে আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ১০ জন চিকিৎসক এ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।
সম্মেলনে ৬টি প্ল্যানারি সেশন, ২টি আন্তর্জাতিক হাইব্রিড সেশন, বিদেশি বিশেষজ্ঞদের ১৫টি উপস্থাপনা, দেশের বরেণ্য চিকিৎসকদের ৪৪টি নিবন্ধ এবং বিভিন্ন বিষয়ের গবেষণালব্ধ ১০০টি ফ্রি পেপার ও ৪৪টি পোস্টার উপস্থাপিত হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন বিষয়ের ওপর সর্বশেষ গবেষণালব্ধ জ্ঞান সম্পর্কে চট্টগ্রামসহ দেশের প্রখ্যাত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা সম্মেলনে অভিজ্ঞতা বিনিময় করছেন। তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক এ সম্মেলন আজ শেষ হবে।