প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ
জিপিএইচ ইস্পাত লি. এর ১৬তম বার্ষিক সাধারণ সভা গতকাল বুধবার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন কোম্পানির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলমগীর কবির। উপস্থিত ছিলেন গ্রুপ চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলমাস শিমুল, পরিচালকবৃন্দ– মো. আশরাফুজ্জামান, মো. আবদুল আহাদ, মো. আজিজুল হক, স্বতন্ত্র পরিচালক মুখতার আহমেদ, নির্বাহী পরিচালক (গ্রুপ) এবং কোম্পানি সচিব আবু বকর সিদ্দিক এফসিএমএ।
নির্বাহী পরিচালক (এফএন্ডবিডি) কামরুল ইসলাম এফসিএ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা ও শেয়ার হোল্ডারদের প্রশ্নের উত্তর দেন। চিফ ফিনানসিয়াল অফিসার এইচএম আশরাফউজ্জামান, এবং কোম্পানির উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। সভায় জিপিএইচ ইস্পাত এর ৩০ জুন ২০২২ সমাপ্ত বছরের আর্থিক প্রতিবেদন, সংশ্লিষ্ট নিরীক্ষা প্রতিবেদন এবং পরিচালনা পর্ষদের প্রতিবেদন সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত ও অনুমোদিত হয়। সভায় ২০২১–২২ অর্থবছরের শেয়ার হোল্ডারদের জন্য ঘোষিত ৫.৫০% নগদ ৫.৫০ % স্টক লভ্যাংশ সহ মোট ১১% লভ্যাংশ অনুমোদিত হয়।
স্বাগত বক্তব্যে সভার সভাপতি মো. আলমগীর কবির বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের নির্মাণ শিল্প সমপ্রসারিত হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে এর সমপ্রসারণ আরও প্রত্যাশিত। আর এই প্রত্যাশিত চাহিদা, নির্মাণ প্রকল্পের স্থায়ীত্ব ও নিরাপত্তার বৃহৎ স্বার্থে জিপিএইচ একমাত্র কোম্পানী যারা বাংলাদেশে প্রথম কোয়ান্টাম টেকনোলোজি সমৃদ্ধ কারখানা প্রতিষ্ঠা করেছে। ইতিমধ্যে আমরা আমাদের দেশের অনেক মেগা প্রকল্প যেমন থার্ড টার্মিনাল, কর্ণফুলী টানেল ইত্যাদিতে অংশগ্রহণ করে আমাদের সক্ষমতা প্রমাণ করেছি।
তিনি বর্তমান নির্মাণ শিল্পে জিপিএইচ এর অবদান চলমান রাখা এবং ভবিষ্যতের কৌশলগত পরিকল্পনার অংশ হিসাবে দেশ ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটা শক্ত ভিত নিশ্চিত করার জন্য যে সমস্ত চ্যালেঞ্জ রয়েছে যেমন, নতুন ব্যবসা সমপ্রসারণ, সরকারী ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার সাথে সম্পর্ক ও সহযোগিতা নিশ্চিত করা এবং ইস্পাত শিল্পে আরও মজবুত করার চ্যলেঞ্জগুলো সফলভাবে মোকাবেলা করার আশা ব্যক্ত করেন এবং তার জিপিএইচ ব্যবসায় সঠিক পথেই আছে বলে সবাইকে আশ্বস্ত করেন।
গ্রুপ চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ, কোভিড–১৯ ও বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার কারনে স্টিল মার্কেট এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে এবং পাশাপাশি কাঁচামালের দাম, জাহাজীকরণ এবং পণ্য পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে, জিপিএইচ ম্যানেজমেন্ট কৌশলগত সিদ্ধান্ত, নতুন নতুন উদ্ভাবন, খরচ নিয়ন্ত্রণ, বিদ্যুৎ সাশ্রয় ইত্যাদি নীতি গ্রহণ করার ফলে তার টার্গেট আয় প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। যা বিগত বছরের তুলনায় ৬৫.৬৭ % বেশি। ২০২১–২০২২ অর্থ বছরে জিপিএইচ তার উৎপাদন ও বিক্রয়ের বিভিন্ন পর্যায়ে ৪৪২.২৩ কোটি টাকা সরকারী কোষাগারে জমা করেছে এবং সেটা প্রায় আমাদের মোট বিক্রয়ের ১০% এবং বিগত বছরের তুলনায় ১৩ % বেশি।
বাজার সমপ্রসারণ ও বিক্রয় প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার জন্য আমরা আমাদের রপ্তানি ব্যবসা বৃদ্ধি, শক্তিশালী বাজারজাতকরণ দল গঠন ও বিপণন নেটওয়ার্ক সমপ্রসারিত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। বাংলাদেশের ইস্পাত শিল্পের সামগ্রিক অবস্থান ও বর্হিবিশ্বের পরিবেশ বিবেচনা করে আমরা বলতে পারি জিপিএইচ বর্তমানে একটা টেকসই অর্গানাজেশন হিসেবে স্বীকৃত এবং আমরা বিশ্বাস করি আমরা আমাদের এই প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা আগামী দিনগুলোতে আরও ত্বরান্বিত হবে।
তিনি বলেন, জিপিএইচ বুয়েট পরীক্ষিত প্রথমবারের মতো কোয়ান্টাম বি– ৬০০ সি–আর স্টিল রি–বার উৎপাদন শুরু করেছে। তা দেশের ক্রমবর্ধমান আবাসিক এবং অবকাঠামোগত নির্মাণের চাহিদা পূরণে প্রস্তুত রয়েছে। উক্ত স্টিল রি–বার বাজারের যেকোন রডের চেয়ে শক্তিশালী, যা নির্মাণের রডের ব্যবহার ১৬% থেকে ৩০% কম হবে। পাশাপাশি লেবার সহ অন্যান্য নির্মাণ খরচও কমে আসবে এবং ফ্লোর স্পেস বৃদ্ধিসহ নির্মাণের গুণগত মান উন্নত করবে এবং বিল্ডিংয়ের ডেডলোড কমিয়ে দেবে।
সমাপনী বক্তব্যে জিপিএইচের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলমাস শিমুল বলেন, আমরা সেরা প্রযুক্তি ও মানসম্পন্ন স্টিল তৈরি করছি। শেয়ারহোল্ডাররা যে জিপিএইচ এর উপর আস্থা রেখেছেন এবং আমাদের মানব সম্পদ দক্ষতার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন তার জন্য তিনি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।