আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
খেরসনে ঘনিয়ে আসতে থাকা প্রবল রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের আগে রাশিয়া খালি বাড়িগুলোতে লুটপাট চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ইউক্রেন। বেসামরিক পোশাক পরে রুশ সেনারা বাড়িগুলো দখল করে নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে বলে জানিয়েছে তারা।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোলিয়াক গতকাল সোমবার এক টুইটে বলেছেন, ‘রাশিয়া মানুষজনকে খেরসন থেকে সরিয়ে নেওয়ার কথা বলে তাদেরকে বাড়ি থেকে জবরদস্তি উৎখাত করছে। আর এ সুযোগে রুশ বাহিনী এবং রাশিয়ার এফএসবি কর্মকর্তারা তাদের পছন্দের কাজটি করছে- বাসিন্দাদের ফেলে যাওয়া বাড়িঘরে লুটপাট চালাচ্ছে তারা। সেইসব মানুষের ঘরবাড়িই তারা লুট করছে যাদেরকে তারা সুরক্ষা দিতে এসেছিল।’
গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের শুরুর দিকেই খেরসন দখল করেছিল রাশিয়া। পরে তারা নিজ ভূখন্ডের সঙ্গে খেরসনকে যুক্ত করে নেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছে। ইউক্রেন এবং রাশিয়া উভয়ের জন্যই কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ নগরী খেরসন। এ নগরী ২০১৪ সালে রাশিয়ার দখল করে নেওয়া ক্রাইমিয়া উপদ্বীপে যাওয়ার প্রবেশদ্বার।
সমপ্রতি ইউক্রেনীয় বাহিনী ধীরে ধীরে রাশিয়া-নিয়ন্ত্রিত খেরসনের উপকণ্ঠে ভূখন্ড পুনর্দখল করেছে। এই নগরী পুনর্দখল করতে পারলে যুদ্ধে বিরাট জয় পাবে তারা। তবে রুশ বাহিনী সেখানে পাল্টা আক্রমণের মুখে বেকায়দায় থাকলেও সহসাই বিদায় নেওয়ার সম্ভাবনা নেই।
সেকারণেই আগামী দিনগুলোতে খেরসনে অপেক্ষা করে আছে প্রবল রক্তক্ষয়ী একটি লড়াই। এই লড়াইয়ের ঝুঁকি আঁচ করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমর পুতিন এরই মধ্যে হামলা থেকে বাঁচতে বিপজ্জনক এলাকাগুলো থেকে মানুষজনকে সরিয়ে নেওয়া শুরু করেছে।
খেরসন থেকে এরই মধ্যে অন্তত ৭০ হাজার মানুষ চলে গেছে। উপরন্তু গত ৪৮ ঘন্টায় খেরসনের পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহব্যবস্থা অচল হয়ে নগরীটি অন্ধকারে ঢাকা পড়েছে। একে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড আখ্যা দিয়েছে রাশিয়া।
রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর এই প্রথম খেরসন বিদ্যুৎ ও পানি বিচ্ছিন্ন হয়েছে। ইউক্রেন বলছে, রাশিয়াই বিদ্যুৎ লাইন ধ্বংস করেছে।
ইউক্রেনের সেনাবাহিনী খেরসন পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে বলেছে, রুশ বাহিনী বেসামরিক মানুষজনের পোশাক পরে ছদ্মবেশে তাদের ঘরবাড়িগুলো দখল করছে। রাস্তায় রাস্তায় লড়াইয়ের জন্য তারা এভাবে ঘরবাড়ির ভেতরে থেকে অবস্থান শক্তিশালী করছে।