টেকনাফ প্রতিনিধিঃ
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর কারণে কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপে জলোচ্ছ্বাস সহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
গত সোমবার ৬নং বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলার পর মধ্যরাতে টেকনাফ সাগর উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সেন্টমার্টিন ইউনিয়নে জলোচ্ছ্বাস ঘটে।
রাত ৮টার পর থেকে সাগরের পানি বৃদ্ধি পেয়ে দ্বীপের বিভিন্ন এলাকায় ঢুকে পড়ে। এ সময় স্হানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমানের প্রচেষ্টায় কয়েক হাজার অধিবাসী আশ্রয় কেন্দ্রে জড়ো হয়। পরে রাত ১০টার পর থেকে পানি কমতে শুরু করে। পানি সরে গেলে লোকজন রাতেই নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যায়।
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, “সকালে প্রবল জোয়ারের তোড়ে জেটি ঘাট ও অন্যান্য এলাকা থেকে প্রায় ১৮টি ফিশিং ট্রলার ও হিজবুল বাহার নামের ১টি সার্ভিস ট্রলার ডুবে যায়। এর মধ্যে মোহাম্মদ আয়ুব ও আবু বক্করের দু’টি ট্রলার সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। অতি জোয়ারে ফসলি জমি ও ফসলের ক্ষতি হয়েছে।”
সেন্টমার্টিন দ্বীপের পূর্ব পাড়া, পশ্চিমপাড়া, মাঝের পাড়া কোনারপাড়া ও উত্তরপাড়া সহ অনেক এলাকা জলমগ্ন হয়ে যায়। পানি চলে যাওয়ার সাথে সাথে রাস্তা ও বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্হ হয়।”
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে প্রবাল দ্বীপটিতে ৬/৭ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হলে প্রায় ৪ হাজার নারী পুরুষ ও শিশু সহ স্থানীয় আশ্রয় কেন্দ্র ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে আশ্রয় নেয়।
সেন্টমার্টিন দ্বীপ থেকে ইউপি সদস্য খোরশেদ আলম বলেন, “সেন্টমার্টিন দ্বীপের ইতিহাসে অতীতে এ ধরনের ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব দেখিনি যা অতীতকে পর্যন্ত হার মানিয়েছে। এমনকি ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর প্রভাবে সেন্টমার্টিনে যাতায়াতের একমাত্র জেটির উপর জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়ে আশপাশের হোটেল রিসোর্ট সহ বহু ঘরবাড়ি হাঁটু পরিমাণ জলমগ্ন হয়।
চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান আরো বলেন, “সেন্টমার্টিন দ্বীপে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়ীবাঁধ না থাকার কারণে স্বাভাবিক জোয়ারও ঠেকানো যায়নি যা নিয়ে দ্বীপবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সাগরের লবণাক্ত, পানির উচ্চতা বৃদ্ধি এবং দ্বীপে সুপেয় পানির অভাব দেখা দিয়েছে। ফলে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপটি এখন চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।”
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এরফানুল হক চৌধুরী বলেন, “ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো পুরোপুরি আসেনি। পরবর্তীতে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।”