চট্টগ্রামের সময় ডেস্কঃ
চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে ভারতের মেঘালয়ের চা পাতার চালানটি কলকাতার বন্দরে পাঠানোর মাধ্যমে সম্পন্ন হলো ভারতীয় ট্রানজিটের ট্রায়াল রান। ৮ টন চা পাতা বোঝাই ভারতীয় জাহাজ এমভি ট্রান্স সামুদেরা গতকাল বুধবার সকালে চট্টগ্রাম ছেড়েছে। এই চালানটির মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির আওতায় বাংলাদেশের স্থলপথ ও সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে সব অনুমোদিত রুটেই ভারতের পণ্য ভারতে নেওয়ার অংশ হিসেবে ট্রানজিটের ট্রায়াল শেষ হলো।
এর পর ট্রানজিটের রুট, ব্যয়, ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করে অবকাঠামো উন্নয়নসহ বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক আলোচনার ভিত্তিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রানজিটের পণ্য পরিবহন শুরু করা হবে।
সূত্র জানিয়েছে, ২০১৮ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পাদিত ‘অ্যাগ্রিমেন্ট অন দ্য ইউজ অব চট্টগ্রাম অ্যান্ড মংলা পোর্ট ফর মুভমেন্ট অব গুডস টু অ্যান্ড ফরম ইন্ডিয়া’ চুক্তির আওতায় চারটি ট্রায়াল সম্পন্ন করার কথা। ওই চুক্তির আওতায় ২০২০ সালে এমভি সেঁজুতি জাহাজে কলকাতা বন্দর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে ট্রানজিটের চার কন্টেনার পণ্য এসেছিল।
পরবর্তীতে মংলা বন্দরের মাধ্যমেও পণ্য ট্রানজিট করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে সম্প্রতি মেঘালয়ে উৎপাদিত ৮ টন চা পাতার একটি চালান কলকাতার শ্যামাপ্রসাদ বন্দরে পৌঁছানোর জন্য ডাউকি-তামাবিল-চট্টগ্রাম সড়ক পথ ব্যবহার করে চট্টগ্রাম বন্দরে আনা হয়। এখান থেকে জাহাজে বোঝাই করে কন্টেনারটি কলকাতা পৌঁছে দেয়ার কথা।
কিন্তু বেশ কয়েকদিন আগে চালানটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছে। কিন্তু ভারতীয় জাহাজ এমভি ট্রান্স সামুদেরায় যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়ায় চালানটি সময়মতো পাঠানো সম্ভব হয়নি। জাহাজটির প্রয়োজনীয় মেরামত করার পর গতকাল সকালে চা পাতার কন্টেনারটি কলকাতা প্রেরণের জন্য শিপমেন্ট করা হয়।
আর এর মাধ্যমেই ট্রানজিটের ট্রায়াল রানেরও সবগুলো রুটেই পণ্য পরিবাহিত হয়েছে। সর্বশেষ রুটের ট্রায়াল পরিচালনা করে টাটা স্টিল ও সিজে দারসেল লজিস্টিকস লিমিটেড।
সূত্র বলেছে, বাংলাদেশ এবং ভারতের চুক্তির অধীনে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর থেকে পণ্য পরিবহনের জন্য আটটি অনুমোদিত রুট রয়েছে। এগুলো হলো আখাউড়া হয়ে আগরতলা, তামাবিল হয়ে ডাউকি, শেওলা হয়ে সুতারকান্দি, বিবিরবাজার হয়ে শ্রীমন্তপুর এবং এর বিপরীতে চারটি রুট।
২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে চুক্তিটি কার্যকর করার জন্য একটি এসওপি স্বাক্ষর করা হয়। ওই চুক্তির অধীনে চট্টগ্রাম-আখাউড়া-আগরতলা রুটে প্রথম ট্রায়াল মুভমেন্ট ২০২০ সালের জুলাইয়ে পরিচালিত হয়েছিল। যেখানে দুটি টিএমটি স্টিল এবং দুটি শস্যদানা ভর্তি কন্টেনার কলকাতা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে আইসিপি আগরতলায় পৌঁছানো হয়েছিল।
এই ট্রানজিট বা ট্রান্সশিপমেন্ট ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহনের খরচ ও সময় উভয়ই কমিয়ে দেবে।
এ ট্রান্সশিপমেন্টে বাংলাদেশের ট্রাক ব্যবহৃত হবে। গতকালের ট্রায়াল রানের মাধ্যমে এই চুক্তির অধীনে সব অনুমোদিত রুটে ট্রায়াল সম্পন্ন হওয়ায় এবার নিয়মিত পণ্য চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকার প্রয়োজনীয় আদেশ বা বিজ্ঞপ্তি জারি করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।