চট্টগ্রামের সময় ডেস্কঃ
সরকারের স্বেচ্ছাচারিতা চরমে উঠেছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ক্ষমতাসীনদের আর সময় দেওয়া ঠিক হবে না। গতকাল বৃহস্পতিবার নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক শোক র্যালির আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এই মন্তব্য করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার একে তো ভয়াবহ স্বৈরাচারের রূপ নিয়েছে, আমাদের ঘরে ঘরে গিয়ে পুলিশ নাম নিচ্ছে। আজকে এরকম একটা কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে, এরকম একটা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে এই সরকার। এই সরকারকে আর সময় দেয়া যায় না। তারা এখন জাতির জন্যে বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে এই দেশের মানুষ জেগে উঠেছে, তরুণ-যুবকেরা জেগে উঠেছে। প্রতিদিন এই স্বৈরাচারী সরকারের পতনের লক্ষ্যে, তাদেরকে সরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে মানুষের মিছিলে মিছিলে আরও মানুষ বাড়ছে। আমরা অনেক রক্ত দিয়েছি, আমরা আরো রক্ত দেব। আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব, পেছনে ফিরব না।
এই সরকারকে বাধ্য করব পদত্যাগ করতে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে। সংসদ বিলুপ্ত করে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের মধ্য দিয়ে জনগণের ভোটে নতুন পার্লামেন্ট গঠন করে নতুন সরকার গঠন করা হবে, জনগণের সরকার গঠন করা হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের মানুষ যাতে সঠিক তথ্য জানতে না পারে, আমাদের গণমাধ্যম যেন এই সরকারের দুর্নীতি প্রকাশ করতে না পারে, তার জন্য তারা সার্কুলার দিয়ে ২৯টি বিভাগকে ‘তাদের কাছ থেকে কোনো খবর, তারা কাউকে কোনো খবর দেবে না’- এরকম সার্কুলার দিয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে তাদের যে দুর্নীতি, তাদের যে চুরি সেগুলোকে ঢেকে রাখবার জন্যে, তাদের স্বেচ্ছাচারিতা ঢেকে রাখবার জন্যে তারা সমস্ত দেশকে জাতিকে আজকে বঞ্চিত করে রাখতে চায় সঠিক খবর থেকে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, রাজবাড়ীতে মহিলা দলের এক নেত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায়, যার দুটি শিশু রয়েছে। কী অপরাধ? অপরাধ হচ্ছে সে সামাজিক মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়েছে, লিখেছে এই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। কেন? আপনি কি গড? বিধাতা? যে আপনার বিরুদ্ধে কথা বলা যাবে না।
গণতান্ত্রিক দেশে যে কারো সমালোচনা করবার অধিকার আছে, প্রত্যেকটি মানুষের অধিকার রয়েছে। আজকে আমাদের সেই বোন সেই কাজটি করেছে। এদের অত্যাচারের মাত্রা কোন জায়গায় গেছে যে, তারা একজন নারীকে পর্যন্ত গভীর রাতে গিয়ে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে।
ফখরুল বলেন, আজকে আমাদের অস্তিত্বের জন্যে, আমাদের বাঁচার জন্যে, আমাদের এই জাতিকে রক্ষা করবার জন্যে, আমাদের কোনো বিকল্প নাই এই ফ্যাসিবাদী সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।
জ্বালানি তেল ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ভোলায় পুলিশের সাথে সংঘর্ষে নূরে আলম, আব্দুর রহিম, নারায়ণগঞ্জের শাওন প্রধান, মুন্সিগঞ্জের শহীদুল ইসলাম শাওন ও যশোরের আব্দুল আলিম নিহতের প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই শোক র্যালি হয়।
নয়া পল্টন থেকে কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড় হয়ে নয়া পল্টনের সড়ক দিয়ে আরামবাগ মোড় ঘুরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এসে র্যালি শেষ হয়। কালো পতাকা হাতে কয়েক হাজার নেতা-কর্মী র্যালিতে অংশ নেয়।