চট্টগ্রামের সময় ডেস্কঃ
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, মিয়ানমারে যে ঘটনাগুলো ঘটছে সেগুলো তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। তাদের নিজেদের মধ্যে অনেক সমস্যা। তারা অনেক সংকটের মধ্যে পড়েছে। আরকান আর্মিসহ বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে চলছে। আমরা শুনেছি এবারো তারা আমাদের সীমানা এলাকায় আরকান আর্মির সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে।
তাদের এসব যুদ্ধের সাথে আমাদের দেশের কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা মনে করি, তারা সেখানে যুদ্ধ করলে আমাদের দেশে অনুপ্রবেশ ঘটবে না এবং ঘটাবে না। বিজিবি এখন পর্যন্ত অত্যন্ত দক্ষতার সাথে সীমান্ত অঞ্চল রক্ষা করে চলছে।
মিয়ানমারের পরিস্থিতির কারণে সীমান্তে সৈনিক বাড়ানো হয়েছে। যাতে করে তারা বিজিবির চৌকিগুলো সারাক্ষণ পর্যবেক্ষণ করে। আমরা নির্দেশ দিয়েছি, আরকান আর্মি কিংবা বিজিপি বা অন্য কোনো বাহিনী আমাদের সীমানায় যেন না ঢুকে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিজিবির প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান সাতকানিয়ার বায়তুল ইজ্জত বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার এন্ড কলেজের ৯৮তম রিক্রুট ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজ শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের সীমান্তে আমরা কাউকে প্রবেশ করতে দেবো না। বিচ্ছিন্নতাবাদী কিংবা মিয়ানমার আর্মি বা তারা যারাই হোক, তাদের সীমানায় তারা যুদ্ধ করুক বা যা ইচ্ছা করুক কোনো অসুবিধা নেই।
কিন্তু যা করার সেখানে করবে। আমাদের সীমানায় ঢুকতে দেবো না। এটা আমাদের ক্লিয়ার ম্যাসেজ। সীমান্তে আমাদের বিজিবিও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দিন রাত দক্ষতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা মনে করে তারা সঠিক কাজটাই করছে।
এর আগে বায়তুল ইজ্জত বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার এন্ড কলেজের বীর উত্তম মজিবুর রহমান প্যারেড গ্রাউন্ডে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে সশস্ত্র সালাম জানিয়ে ৯৮তম রিক্রুট ব্যাচের নবীন সৈনিকদের শপথ গ্রহণ ও সমাপনী কুচকাওয়াজ সম্পন্ন হয়।
অভিবাদন মঞ্চে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিক মো. আখতার হোসেন, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মসিউর রহমান উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম-১৪ আসনের সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম চৌধুরী ও সাতকানিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ মোতালেব উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নবীন সৈনিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, শৃঙ্খলা হচ্ছে সৈনিকের পরিচিতি। আদেশ ও কর্তব্য পালনে যে কখনো পিছপা হয় না সে-ই প্রকৃত সৈনিক। সততা, বুদ্ধিমত্তা, নির্ভরযোগ্যতা, আনুগত্য, তেজ ও উদ্দীপনা একটি বাহিনীর শৃঙ্খলা ও পেশাগত দক্ষতার মাপকাঠি। নবীণ সৈনিকদের মধ্যে তারই প্রতিফলন আমাদের সকলকে অনুপ্রাণিত ও মুগ্ধ করেছে।
‘সীমান্তের অতন্ত্র প্রহীর’ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে সীমান্ত প্রহরার মাধ্যমে দেশের সার্বভৌমত্বের অখন্ডতা রক্ষা করা।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর হতে এই বাহিনীকে একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ও অত্যাধুনিক সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাহিনীর সাংগঠনিক কাঠামোকে ব্যাপক পরিবর্তন করে বিজিবি আজ একটি ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে জল, স্থল ও আকাশ পথে দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হয়েছে।
এদিকে, কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে নবীন সৈনিকদের মধ্যে শারীরিক উৎকর্ষে সেরা নবীন সৈনিক (পুরুষ) মো. লিটন মিয়া, সেরা নবীন সৈনিক (মহিলা) শিরি খাতুন, ফায়ারিংয়ে আমিনুল ও সর্ববিষয়ে সেরা নবীন সৈনিক মো. আনোয়ার হোসেনকে ক্রেস্ট তুলে দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।