কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ
চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলম, তার স্ত্রী শাহেদা বেগম এবং তাদের দুই সন্তানকে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব দিতে তাদের দুদক কার্যালয়ে তলব করা হলে গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে তারা দুদকের কক্সবাজার কার্যালয়ে উপস্থিত হন। এমপি জাফর আলম দুদক কার্যালয়ে সোয়া ২ ঘণ্টা অবস্থানের পর বের হয়ে গেলেও স্ত্রী শাহেদা বেগম ও দুই সন্তান ছিলেন সাড়ে ৩টা পর্যন্ত।
বেলা সোয়া ২টার দিকে দুদক কার্যালয় থেকে বের হয়ে গাড়িতে ওঠার সময় জাফর আলম উপস্থিত মিডিয়াকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘শাক দিয়ে মাছ ঢাকা যায় না।’ এর বাইরে তিনি আর কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তবে এমপি পুত্র তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী তুহিন সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, আমার বাবা কক্সবাজারের কিছু উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির বিষয়ে গণমাধ্যমে কথা বলেছেন। এতে একটি শক্তিশালী ও সংঘবদ্ধ চক্র বাবার ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে দুদকে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন। আমরা দুদক কার্যালয়ে এসে সমস্ত ডকুমেন্ট দিয়েছি। শেষ পর্যন্ত সব অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হবে।
স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হিসাব দিতে সংসদ সদস্য জাফর আলম, তার স্ত্রী শাহেদা বেগম, মেয়ে তানিয়া আফরিন ও ছেলে তানভীর সিদ্দিকী তুহিনকে গত ২৪ আগস্ট দুদক কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিনের স্বাক্ষরে আলাদা পত্রের মাধ্যমে দুদকে হাজির হতে বলা হয়।
নোটিশে গত ৪ সেপ্টেম্বর তাদের দুদক কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হলেও ওই দিন এমপি জাফর আলম চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সম্মেলন নিয়ে ব্যস্ত থাকায় হাজিরা দিতে পারেননি। দুদকের নোটিশে তাদের এনআইডি কার্ড, পাসপোর্ট, আয়কর রিটার্নের কপি, ব্যাংক হিসাব বিবরণী, স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের ক্রয়-বিক্রয়ের দলিল এবং তাদের ওপর নির্ভরশীলদের আয়ের বিবরণীসহ সংশ্নিষ্ট কাগজপত্র নিয়ে আসতে বলা হয়।
অভিযোগে বলা হয়, এমপি-পত্নী শাহেদা বেগম সরকারি জমি, চিংড়ি ঘের, জলমহাল দখল ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলনসহ নানা মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন।
দুদকের কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, আজ (গতকাল) তারা (এমপি জাফর ও তার পরিবার সদস্যরা) সশরীরে দুদক কার্যালয়ে এসে কাগজপত্র জমা দিয়েছেন। তারা যে কাগজপত্র জমা দিয়েছেন তা যাচাই বাছাই ও অনুসন্ধান করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।