চট্টগ্রামঃ
কর্মী সংগ্রহের সময় বাকবিতণ্ডার জের ধরে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের সময় কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক নাজমা বেগমের কক্ষ ভাঙচুর করা হয়।
এ সময় কলেজের বেশ কয়েকটি জানালার কাচ ও ফুলের টব ভাঙচুর করেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের এই ঘটনায় ছাত্রলীগ কলেজ শাখার সভাপতি মাহমুদুল করিম ও সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজের অনুসারীরা পরস্পরের ওপর হামলা চালান বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গতকাল সকালে কলেজের ইতিহাস বিভাগে কর্মী সংগ্রহ করছিলেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিমের অনুসারীরা। একই সময়ে সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মল্লিকের অনুসারীরাও ইতিহাস বিভাগে কর্মী সংগ্রহ করছিলেন। কর্মী সংগ্রহকে কেন্দ্র করে এ সময় দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এর জের ধরে পরে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এতে উভয় পক্ষ পরস্পরের প্রতি ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে সাফায়েত হোসেন রাজু (গণিত চতুর্থ বর্ষ), হামিম রাফসান (এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষ), জাহেদুল অভি (ইসলামের ইতিহাস দ্বিতীয় বর্ষ), ওয়াহিদুল রহমান সুজন (স্নাতক তৃতীয় বর্ষ), আলিফ জাবেদ (ইতিহাস প্রথম বর্ষ), জিয়াউদ্দিন আরমান (সমাজবিজ্ঞান বিভাগ), নাঈম (ইতিহাস বিভাগ) ও মনিরুজ্জামানের নাম জানা গেছে।
তাদের মধ্যে জিয়াউদ্দিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
একাধিক ছাত্র বলেন, সভাপতি ও সম্পাদকের মধ্যে বেশ আগে থেকে বিরোধ চলে আসছে।
কলেজের নানা অনুষ্ঠান আয়োজন নিয়ে কয়েক দিন ধরে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করে। এরই জের ধরে গতকাল সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ মেইন বিল্ডিংয়ের সামনে ইতিহাস বিভাগ মাস্টার্সের শিক্ষার্থী জিয়া উদ্দিন আরমানকে মারধর করে সভাপতির অনুসারীরা। এ সময় জিয়া উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগে গিয়ে আশ্রয় নিলে সেখানেও তাকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
এর জের ধরে পরে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের সময় উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক নাজমা বেগমের কক্ষ ভাঙচুর করা হয়। চুরমার করা হয় বেশ কয়েকটি জানালার কাচ ও ফুলের টব।
কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুভাষ মল্লিক সবুজ সাংবাদিকদের বলেন, সকালে ইতিহাস বিভাগের ক্লাসে গেলে মাহমুদের সমর্থকরা আমাদের কর্মীদের ওপর হামলা করে। এতে মাথা ফেটে যায় কয়েকজনের। এ ঘটনায় আমার ৪ কর্মী আহত হয়েছেন।
কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে বহিরাগতরা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে। এতে রাজসহ কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুর কাদের মজুমদার বলেন, দুপুরে হঠাৎ ছাত্রলীগের দুই পক্ষ মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। লাঠিসোঁটা নিয়ে একে অপরের দিকে তেড়ে যায়, পাথর ছুড়ে মারে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে কয়েকজন সামান্য আহত হতে পারেন। ঘটনা তেমন বড় নয়। কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ করেনি।