পটিয়া প্রতিনিধিঃ
পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি বলেছেন, শেখ হাসিনা বিগত ১৩ বছরে দেশে ম্যাজিক উন্নয়ন করেছেন। এ ধারা অব্যাহত রাখতে হলে দেশকে ভালবাসতে হবে। এখন এগিয়ে যাওয়ার সময়। সকল ভেদাভেদ ভুলে এক কাতারে এসে উন্নয়ন কাজ সামিল হতে হবে।
বিশ্বের যেখানে যান মানুষের মুখে মুখে বাংলাদেশের উন্নয়নের গল্প শুনতে পাওয়া যায়। গতকাল বুধবার পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মুজিব জন্ম শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে পটিয়া উৎসবের দ্বিতীয় দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পরিকল্পনা মন্ত্রী আরো বলেন, মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অর্জন জাতির সামনে তুলে ধরেছি। টানা ষোল বছর যাবত আঠারো কোটি বাঙালির মধ্যে সাক্ষরতার হার ৭৫ শতাংশ। বাংলাদেশ এখন ভারত, নেপাল, ভুটান, পাকিস্তানকে টপকিয়ে সাক্ষরতার হারে এগিয়ে রয়েছে।
অন্য দেশের লোকজন এখন নিজেদের দেশের নামও এতবার উচ্চারণ করে না, যতবার বাংলাদেশের নাম উচ্চারণ করে। এর কারণ একটাই বাংলাদেশের উন্নয়ন। বাংলাদেশকে বদলে দেওয়ার মূল কারিগর হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বের কোনো বিকল্প নেই। তাই দেশের উন্নয়ন অগ্রগতির ধারাবাহিকতা রক্ষায় শেখ হাসিনাকে শক্তি যোগাতে হবে, তার পাশে থাকতে হবে।
পটিয়ার বিষয় তুলে ধরে তিনি বলেন, সাবেক মহকুমা সদর পটিয়া বারে বারে বঞ্চনার শিকার। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি। বঞ্চিত পটিয়া যাতে অল্প সময়ের মধ্যে জেলায় রূপান্তর করা যায়, আমি এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবগত করব। দক্ষিণ চট্টগ্রামের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী বেষ্টিত হলেও, এখানে উচ্চশিক্ষার আয়োজন নেই। তার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের জন্য পরিকল্পনা করা হবে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি হুইপ সামশুল হক চৌধুরী বলেছেন, পটিয়ার অনেক গুণিজন দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় অধিষ্ঠিত রয়েছেন। এসব গুণিজনদের পটিয়ার সাধারণ অনেক মানুষের কাছে পরিচিত করে দিতে পেরে আমি ধন্য হয়েছি।
পটিয়া উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী এতে সভাপতিত্ব করেন। স্বাগত বক্তব্য দেন, পটিয়া ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন।
বক্তব্য রাখেন , সাংবাদিক শহীদ উল আলম, সাবেক সাংসদ চেমন আরা তৈয়ব, পটিয়া পৌরসভার মেয়র আইয়ুব বাবুল, সাংবাদিক আসিফ সিরাজ, দৈনিক আজাদীর সহযোগী সম্পাদক কবি রাশেদ রউফ, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সেক্রেটারী মহসিন চৌধুরী।
উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম সামশুজ্জামান চৌধুরী, আ’লীগ নেতা প্রদীপ দাশ, দেবব্রত দাশ, ডা. তিমির বরণ চৌধুরী, বিজন চক্রবর্তী, অধ্যাপক হারুনুর রশিদ, ভাইস চেয়ারম্যান মাজেদা বেগম শিরু, সওয়ার হায়দার, সাংবাদিক শহীদুল্লাহ শাহরিয়ার, সাংবাদিক প্রণব বড়ুয়া অর্ণব, সাংবাদিক অনিন্দ্য টিটো, সাংবাদিক মিয়া মোহাম্মদ আরিফ, আলোকচিত্রী রাজেশ চক্রবর্তী, আলোকচিত্রী অনুপম বড়ুয়া, আলোকচিত্রী নিপুল কুমার দে ছাড়াও পটিয়া পৌরসভার কাউন্সিলর, পটিয়ার ১৭ ইউপির চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, স্থানীয় আ’লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ।
পরে পটিয়ার ১১ গুণিকে ‘পটিয়া রত্ন’ ঘোষণা করে স্বর্ণপদক সম্মাননা প্রদান করা হয়। স্বর্ণপদকপ্রাপ্তরা হলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি ফজলুল করিম, সাবেক ভারপ্রাপ্ত আইজিপি নসরুল্লাহ খান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এ জেড এম নাসির উদ্দিন, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেন, হাইকোর্টের বিচারপতি জেবিএম হাসান, প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ, কেডিএস গ্রুপের চেয়ারম্যন খলিলুর রহমান, মীর গ্রুপের চেয়ারম্যান মীর আহমদ সওদাগর।
অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষক হুইপ সামশুল হক চৌধুরী বলেছেন, পটিয়ার মানুষ আমাকে তিন বার ভোট দিয়ে সংসদে পাঠিয়েছে। আমি সংসদ সদস্য হিসেবে নয়, হুইপ হিসেবে নয়, আমি পটিয়ার জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করে যেতে চাই। বর্তমান সরকারের ১৩ বছরের সময়ে পটিয়াতে ৫ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হয়েছে।
২০৩০ সাল নাগাদ পটিয়ায় ৫০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করা হবে। আজকের প্রজন্ম পটিয়াকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। তার জন্য তিনি পটিয়ার সকল শ্রেণী পেশার লোকদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
বিকেলে দ্বিতীয় পর্বে সংক্ষিপ্ত আলোচনার পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আকাশে বর্ণিল আলোকজ্জল দৃষ্টিনন্দন ৫০ টি আতশবাজি পোড়ানো হয়। আজ উৎসবের সমাপনী দিনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বরত পটিয়ার ৩৪ জনকে সম্মাননা স্মারক দেয়া হবে।
এছাড়া পটিয়ার ৫০জন অসহায় ব্যক্তিকে দেয়া হচ্ছে ৫০টি ভ্যান গাড়ি ও পাঁচ হাজার টাকা করে নগদ অর্থ।