চট্টগ্রামঃ
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি বলেছেন, সিআরবি যুগ যুগ ধরে ফুসফুস হিসেবে চট্টগ্রাম শহরের মানুষকে ছায়া এবং স্বস্তি দিয়ে আসছে। এটির নৈসর্গিক পরিবেশ মানুষকে প্রতিনিয়ত কাছে টানে।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর নৈসর্গিক পরিবেশের কারণে সিআরবি হয়েছে সরকার ঘোষিত হেরিটেজ জোন। যা আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃত। সুতরাং সিআরবি’র অবয়ব পরিবর্তনের কোন সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, সিআরবিতে বেসরকারি হাসপাতাল করার যে প্রকল্প নেয়া হয়েছে সেটি অন্যত্র করার বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলবো। তাঁকে (প্রধানমন্ত্রী) বলবো চট্টগ্রামের এক চতুর্থাংশ এলাকার মালিক বাংলাদেশ রেলওয়ে।
হাসপাতাল করার জন্য সিআরবি ছাড়াও হাজার একর জায়গা আছে। সেখানে হাসপাতাল হলে আমরা স্বাগত জানাবো।
তিনি মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে নাগরিক সমাজ চট্টগ্রাম’র নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন।
প্রবীণ পার্লামেন্টারিয়ান ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন নাগরিক সমাজ চট্টগ্রাম’র চলমান প্রতিবাদ কর্মসূচির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে বলেন, সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণ বিরোধী কর্মসূচিতে শুধু আমি নই চট্টগ্রামে অন্যান্য এমপি, মন্ত্রী, মেয়র ও শীর্ষ প্রায় সকল নেতা রয়েছেন।সবাই কোন স্বার্থে নয়, খেলার মাঠ, ওপেন স্পেস বিহীন চট্টগ্রামের ফুসফুস খ্যাত সিআরবি রক্ষায় এগিয়ে এসেছেন।
আমরা সবাই সিআরবিতে শ্বাস নেয়া অব্যাহত রাখতে চাই। তবে আমরা হাসপাতাল নির্মাণের বিরুদ্ধেও নই। হাসপাতাল সিআরবি ছাড়া অন্যত্র হোক- এটাই আমাদের দাবী।
মতবিনিময়ের সময় নাগরিক সমাজ চট্টগ্রাম’র সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল সিআরবি’র নথিপত্র তাঁর কাছে হস্তান্তর করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, নাগরিক সমাজ চট্টগ্রাম’র কো-চেয়ারম্যন বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফজুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ড. ইদ্রিস আলী, জাসদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন বাবুল, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. শাহ আলম, বিএফইউজে’র যুগ্ম মহাসচিব মহসীন কাজী, নাগরিক সমাজ’র যুগ্ম সদস্য সচিব রাশেদ হাসান, বোধনের সভাপতি হালিম দোভাষ, প্রণব চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের প্রচার প্রকাশনা সম্পাদক আলীউর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা নূর খান, সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম মুন্না, সরোয়ার আমিন বাবু, জায়দীদ মাহমুদ, নুরুল আজম প্রমুখ।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, সিআরবি’র রয়েছে ঐতিহাসিক গুরুত্ব। এটি ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থান।
এখানে রয়েছে চাকসুর প্রথম জিএস বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আবদুর রব, শহীদ মনোয়ার, শহীদ নজির, শহীদ আলিমসহ অনেক শহীদের কবর। শহীদের সমাধির উপর কোন স্থাপনা আমরা চাই না। আমরা চাই শহীদের সমাধি সংরক্ষণ।
তিনি বলেন, কোন স্থাপনার জন্য সিআরবিতে আঘাত মানেই হচ্ছে ৭০ লাখ মানুষের ফুসফুসের উপর আঘাত। এ আঘাত চট্টগ্রামবাসী মানবে না।
নাগরিক সমাজ নেতারা অভিযোগ করেন, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ঔপনিবেশিক কায়দায় সিআরবিতে গেইট দিয়ে চট্টগ্রামবাসীকে জিম্মি করতে চেয়েছিল। আমাদের যৌক্তিক দাবির প্রেক্ষিতে তারা পিছু হটতে বাধ্য হয়।
নেতারা আরও বলেন, রেল মন্ত্রী বলেছেন চট্টগ্রামের মন্ত্রী, এমপি, নেতারা না চাইলে হাসপাতাল হবে না। আমরা চ্যালেঞ্জ করে বলতে চাই গুটি কয়েক ছাড়া চট্টগ্রামের প্রায় সকল মন্ত্রী, এমপি ও নেতা সিআরবি রক্ষার পক্ষে নাগরিক সমাজ চট্টগ্রাম’র পক্ষে আছে। সচেতন চট্টগ্রামবাসী সিআরবি রক্ষার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ।