চট্টগ্রামের সময় ডেস্কঃ
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আগামী ৩১ জানুয়ারি। কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ ইসমাইলের আদালতে গতকাল বুধবার দেশের বহুল আলোচিত এ মামলায় চারদিনের যুক্তিতর্ক শেষে রায়ের জন্য এ তারিখ নির্ধারণ করেন বিচারক।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর ফরিদুল আলম জানান, বুধবার আসামি বরখাস্ত ওসি প্রদীপের পক্ষে তার প্রধান আইনজীবী অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্তের অসমাপ্ত যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের মাধ্যমে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। আগেরদিন মঙ্গলবার অ্যাডভোকেট রানা দাশের যুক্তিতর্ক মুলতবি রেখেছিলেন আদালত।
তিনি জানান, এই মামলার ১৫ আসামির পক্ষে তাদের আইনজীবীগণ আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছেন। অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্তের যুক্তিতর্ক শেষ হবার পর রাষ্ট্র এবং বাদীপক্ষের আইনজীবীরা আসামি পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তি খন্ডন করেন। সর্বশেষ সওয়াল-জবাব শেষে আদালত আগামী ৩১ জানুয়ারি মামলার রায়ের দিন ধার্য করেন।
লিয়াকত খুন করেছে দাবি প্রদীপের: এদিকে যুক্তিতর্কের শেষদিন গতকাল আদালতে প্রায় ১০ মিনিট কথা বলেন মামলার আসামি টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। আদালতে ওসি প্রদীপ নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেছেন, ইন্সপেক্টর লিয়াকতই মেজর সিনহাকে খুন করেছে।
তখন আদালত তাকে পাল্টা প্রশ্ন করেন, একথা জবানবন্দিতে বলেননি কেন? আদালতের একাধিক আইনজীবী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তারা জানান, এসময় প্রদীপ কুমার দাশ বিচারকের উদ্দেশে বলেন, স্যার মেজর অবসরপ্রাপ্ত সিনহাকে খুন করেছে পরিদর্শক লিয়াকত। এটা আমি স্পষ্ট জানি।
আমার প্রতি আপনার সদয় বিবেচনা হোক। জবাবে বিচারক জানতে চান, আপনি (প্রদীপ) জেনে থাকলে সেটা জবানবন্দিতে বলেননি কেন? এখন মামলা রায়ের পর্যায়ে। এসব কেন বলছেন?
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম বলেন, বুধবার আসামি প্রদীপের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী রানা দাশগুপ্তের অসমাপ্ত যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে ১৫ আসামির যুক্তিতর্ক শেষ হয়। এরপর আদালত ৩১ জানুয়ারি রায়ের জন্য দিনধার্য করেছেন।
উল্লেখ্য যে, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই ঈদুল আযহার আগের রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফের বাহারছড়ার এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে খুন হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদ খান। এ ঘটনার ৫দিন পর ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে মামলা করেন।
মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান র্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম। চার মাসের বেশি সময় ধরে চলা তদন্তের পর একই বছরের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্তকারীরা কর্মকর্তা।