চট্টগ্রামঃ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ ঘুঘু দেখেছে ঘুঘুর ফাঁদ দেখেনি। আগামীতে তাদেরকে ঘুঘুর ফাঁদ দেখাবো। কথায় কথায় ১৪৪ ধারা ও অনুমতি নিয়ে সমাবেশ করার দিন শেষ হয়ে আসছে। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নয়, জনগণই তাকে মুক্ত করে আনবে। সাংবিধানিক অধিকার ও ষড়যন্ত্রকারীদের কোনোভাবেই আর ছাড় দেয়া হবে না।
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে গতকাল বুধবার সকালে দক্ষিণ জেলা বিএনপির উদ্যোগ আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কর্ণফুলী উপজেলার সিডিএ আবাসিক মাঠে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
আমীর খসরু আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন- সরকারের বিরুদ্ধে নাকি দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আসলে ষড়যন্ত্র মূলত করছে আওয়ামী লীগ। দেশের মানুষের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্র করছে। আবার এদেশের মানুষের ভোট কেড়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। বিচার বিভাগকে কুক্ষিগত করে ক্ষমতায় থাকার ষড়যন্ত্র করছে।
গণমাধ্যমের গলা টিপে ধরে, সরকারের কর্মকর্তাদের ব্যবহার করে ক্ষমতায় থাকার ষড়যন্ত্র করছে। আগামী নির্বাচনে ‘ভোটচুরির’ ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আজ একতাবদ্ধ হয়েছে। আন্দোলনের যে জোয়ার শুরু হয়েছে, আগামী দিনে তারা সেই ষড়যন্ত্রকারীদের ধ্বংস করে দেবে। বাংলাদেশের মানুষ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে, যারা যারা ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
আমীর খসরু বলেন, শুনেছি- সরকার নাকি বিএনপি নেতাকর্মীদের তালিকা করছে। একটা পরামর্শ দিই, আপনারা আওয়ামী লীগের যে গুটিকতক সমর্থক আছে, তাদের তালিকা করুন। আর বাকি সব বিএনপি। আওয়ামী লীগে এখন কোনো রাজনীতিবিদ নেই। লুটপাটে যারা জড়িত, তারা ছাড়া আওয়ামী লীগে এখন আর কেউ নেই।
বেগম খালেদা জিয়াকে আন্দোলনের মাধ্যমে মুক্ত করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, পরিস্কারভাবে বলতে চাই খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই না, খালেদা জিয়াকে মুক্ত আমরা করব। কার কাছে মুক্তি চাইব ? একটা অবৈধ, অনির্বাচিত, দুর্নীতিবাজ, দালাল সরকারের কাছে ? খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব আন্দোলনের মাধ্যমে।
আবারও বলছি, এই অবৈধ সরকার, এই অনির্বাচিত সরকার তাদের কাছে আমাদের গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আমরা চাইতে পারি না। আগে তাদের পতন ঘটাতে হবে। পতনের মাধ্যমে দেশনেত্রীকে মুক্ত করতে হবে। বিএনপি আজ অনেকবেশি শক্তিশালী। গুম-খুন, হত্যা, ষড়যন্ত্রমূলক মামলার মাধ্যমে বিএনপির নেতারা জেলে পুড়ে খাঁটি সোনায় পরিণত হয়েছে।
দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব মোস্তাক আহমেদ খান ও আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এস এম মামুন মিয়ার যৌথ পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, কেন্দ্রীয় শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দিন মজুমদার, হারুনুর রশীদ।
প্রধান বক্তা বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ফারুক বলেন, এদিনে চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাসিঁকাষ্ঠে ঝুলিয়েছিল মাস্টার দা সূর্য সেনকে। এ চট্টগ্রামের মানুষ বিপ্লবী। তারা আর ঘরে বসে থাকবে না। চট্টগ্রাম থেকে হাসিনা সরকারের পতন ঘটানো হবে। খালেদা জিয়াকে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দিয়ে কারাগারে রেখেছেন।
এ ফ্যাসিবাদী সরকার প্রশাসন দিয়ে বিএনপি, ছাত্রদল যুবদল নেতাকে দল থেকে সরানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সরাতে পারেন নাই। কোনো নেতাকর্মীকে সরাতে পারবেন না। প্রতিহিংসার মধ্য দিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতি তিলে তিলে ধ্বংস করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, বেগম জিয়াকে আজকের দিনের মধ্যে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। অন্যথায় রাস্তায় শুয়ে পড়ব।
কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, বিএনপির আজকের এই সমাবেশ প্রমাণ করেছে, চট্টগ্রামবাসী শেখ হাসিনার সরকারকে এক মুহুর্তও ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
যুবদল সভাপতি সাইফুল আলম নীরব বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছেন আর খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত করছে।আমরা খালেদা জিয়ার চিকিৎসার অধিকার চাচ্ছি। কিন্তু সরকার দিচ্ছে না। তাই অধিকার আদায় করে নিতে হবে।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, সাবেক এমপি গাজী শাহজাহান জুয়েল, সরওয়ার জামান নিজাম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এনামুল হক এনাম, মোশারফ হোসেন, অ্যাড. ইফতেখার হোসেন চৌধুরী মহসিন, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসিন আলী, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ সভাপতি আশরাফুল আলম লিংকন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমেদ সাব্বির, দক্ষিণ জেলা যুবদল সভাপতি মো. শাহজান, সাধারণ সম্পাদক মো. আজগর, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুল ইসলাম রাহি, সাধারণ সম্পাদক মন্জুর আলম তালুকদার, ছাত্রদলের সভাপতি শহীদুল আলম শহীদ, সাধারণ সম্পাদক মো. মহসিন, বাঁশখালী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাস্টার মো. লোকমান, কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব হাজী মো. উছমান, পটিয়া বিএনপি নেতা খোরশেদ আলম।