চবি প্রতিনিধিঃ
প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারজন শিক্ষার্থী বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজন বর্তমান ও একজন সাবেক শিক্ষার্থী। গতকাল সোমবার (২০ ডিসেম্বর) কক্সবাজারের টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ থেকে সেন্টমার্টিন পর্যন্ত (বাংলা চ্যানেল) ১৬.১ কিলোমিটার সাঁতার কেটে তারা পাড়ি দেন। সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়।
বাংলা চ্যানেলজয়ী চবি’র চার শিক্ষার্থী হলেন ফিজিক্যাল এডুকেশন এন্ড স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সালাহ উদ্দিন, একই বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শফিউল হাসান, পালি বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী উজ্জ্বল চৌধুরী মারমা এবং পরিসংখ্যান বিভাগের ১৯৯২-৯৩ শিক্ষাবর্ষের সাবেক শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আজাদ। তাদের মধ্যে উজ্জ্বল চৌধুরী মারমা পাহাড়িদের মধ্যে সর্বপ্রথম বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিয়েছেন।
২০০৬ সাল থেকে ‘ষড়জ এডভেঞ্চার’ নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার এ আয়োজন করে আসছে। আয়োজক সহযোগী ছিল ‘এক্সট্রিম বাংলা’।
এ ব্যাপারে ‘ষড়জ এডভেঞ্চার’-এর নির্বাহী পরিচালক লিপটন সরকার আজাদীকে বলেন, “২০০৬ সাল থেকে আমরা বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার এ আয়োজন করে আসছি। গত বছর ৪৩ জন এ আয়োজনে অংশ নিয়ে ৩৯ জন সফলভাবে বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিতে সক্ষম হয়েছে। এবার ‘ফরচুন বাংলা চ্যানেল-২০২১’ এর ১৬তম আসরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৮০ জন সাঁতারু অংশ নেন।”
বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেওয়া সালাহ উদ্দিন আজাদীকে বলেন, “আমি ছোটবেলা থেকেই কাপ্তাই লেকে সাঁতার কেটে বড় হয়েছি। ২০১৭ সাল থেকেই স্বপ্ন ছিল একদিন বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিব। সেই লক্ষে পাঁচ বছর ধরে নিজেকে প্রস্তুত করেছি। অবশেষে সেটা পেরেছি।”
আনন্দ প্রকাশ করে শফিউল হাসান বলেন, “আমার বাড়ি কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট। আমাদের বাড়ির পাশে ছিল গোমতি নদী। ছোট থেকেই নদীতে সাঁতার কাটতাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পরও সাঁতার কাটা বন্ধ করিনি। শারীরিকভাবে দুর্বল হওয়া সত্ত্বেও পিছপা হইনি৷ এই আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।”
উজ্জ্বল চৌধুরী মারমা বলেন, “স্কুল থেকেই সাঁতারের প্রতি ঝোঁক ছিল। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায়ও অংশ নিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে প্রতিযোগিতা করেছি। এ জয় অনেক কঠিন ছিল। ঢেউয়ের কারণে সময় লেগেছে। মাঝে মাঝে মনে হয়েছে হাল ছেড়ে দেই কিন্তু বিশ্বাস হারাইনি। এই জয়ে অনেকের অবদান রয়েছে।” এজন্য সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
ফিজিক্যাল এডুকেশন এন্ড স্পোর্টস সায়েন্সের পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুর আজাদীকে বলেন, “খবরটি শুনে অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছি। এটা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গর্বের।”