সীতাকুণ্ড প্রতিনিধিঃ
সীতাকুণ্ডের কুমিরা জেলেপাড়ার বাসিন্দা গোবিন্দ জলদাস (২৮)। অন্যের বোটে দৈনিক মজুরির কাজ করে পরিবারের ছয় সদস্যের জন্য খাদ্য জোগাড় করতেন। ইলিশের প্রজনন মৌসুমে সাগরে ২২ দিন মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। এতে কাজ হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছেন তিনি।
অন্য বছর মাছ ধরা বন্ধ থাকাকালে সরকারিভাবে চাল দেওয়া হত। এবার এখন পর্যন্ত কোনো সহায়তা পাননি তিনি।
সীতাকুণ্ডের কুমিরা, বাঁশবাড়িয়া, বাড়বকুণ্ড, সলিমপুরসহ বেশ কয়েকটি জেলেপাড়ায় দেখা যায়, মাছ ধরা বন্ধ থাকায় অনেকেই সাগরপাড়ে বসে জাল বুনছেন। কেউ বোট মেরামত করছেন। অনেকেই সাগরপাড়ে বসে অলস সময় পার করছেন।
জেলেরা জানান, এবার বঙ্গোপসাগরের সীতাকুণ্ড ও সন্দ্বীপ চ্যানেলে ইলিশ অনেক কম ছিল। এতে মাছ বিক্রি করে তাদের পরিবারের খরচ চালাতেই হিমশিম খেতে হয়েছে। এর মধ্যে ৪-২৫ অক্টোবর টানা ২২ দিন সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার।
এ সময় বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় অভাব-অনটনে দিন কাটছে তাদের। নিষেধাজ্ঞা চলাকালে অন্য বছর সরকারিভাবে সহায়তা দেওয়া হলেও এবার সেটি দেওয়া হয়নি।
ছলিমপুর জেলেপাড়ার বাসিন্দা নিধিরাম জলদাস বলেন, করোনাকালীন তার বাবা কাঙাল জলদাস মারা যান। এতে পরিবারের ছয়জনের দায়িত্ব পড়ে তার কাঁধে। পরিবার চালাতে সাগরে মাছ ধরার কাজ শুরু করেন তিনি।
অন্যের নৌকায় সাগরে মাছ ধরার কাজ করে যে টাকা পেতেন, সেটি দিয়ে কোনো রকম চলত সংসার। কিন্তু সরকারি নির্দেশনায় মাছ ধরা বন্ধে টানা আট দিন বেকার। বিকল্প কোনো কাজ না জানায় তাকে কষ্টে দিন পার করতে হচ্ছে।
কুমিরা জেলেপাড়ার বাসিন্দা বিপ্লব জলদাস বলেন, সরকারি নির্দেশে সাগরে মাছ ধরা বন্ধ করেছি। আমরা এখন বেকার। বিকল্প কোনো কাজ না জানায় আমাদের রোজগারের পথ বন্ধ। সরকার সাগরে যেতে বারণ করল, এ সময় আমাদের পরিবার কীভাবে চলবে, সেটি নিয়ে ভাবার সময় তাদের নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, সাগরে মাছ ধরা বন্ধকালীন জেলেদের যে সহায়তা দেওয়ার কথা, সেটি এখনো এসে পৌঁছায়নি। আমাদের হাতে এসে পৌঁছলে দ্রুত জেলে পরিবারে বিতরণ করা হবে।