অনলাইন সময় নিউজ ডেস্কঃ
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় পঞ্চম দফার শেষ দিনে এক সেনা কর্মকর্তাসহ চারজন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
গত মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) কক্সবাজার জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাঈলের আদালতে এ সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন করা হয়।
সকাল সোয়া ১০টায় মামলার ৩২ নম্বর স্বাক্ষী সেনা কর্মকর্তা লে. কর্নেল ইমরান হাসানের জবানবন্দী দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করা হয় বলে আদালত সূত্র জানায়। এরপর আরও তিন স্বাক্ষী এসআই সোহেল সিকদার, এএসআই নজরুল ও কন্সটেবল শুভ পাল সাক্ষ্য দেন। আজ সাক্ষ্যদানের জন্য রাষ্ট্রপক্ষ ৯ জন স্বাক্ষীকে আদালতে উপস্থাপন করেছিল।
স্বাক্ষীদের জবানবন্দী ও আসামীপক্ষের জেরা শেষে মধ্যাহ্ন বিরতিতে আগামী ২৫ থেকে ২৭ অক্টোবর তিন দিন মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য্য করে আদালত।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে মামলার ১৫ আসামীকে প্রিজন ভ্যানে করে কড়া পুলিশ পাহারায় আদালতে আনা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম জানান, আদালতে ৯ জন স্বাক্ষীকে সাক্ষ্যদানে হাজির করা হলেও আসামীপক্ষের আইনজীবীদের অনীহার কারণে চারজনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্ভব হয়।
আসামীপক্ষের আইনজীবীরা মামলায় কালক্ষেপণের জন্য দুই নম্বর স্বাক্ষী সাহেদুল ইসলাম সিফাতকে রিকল করার আবেদন করেছেন।
তিনি বলেন, মামলায় মোট স্বাক্ষী ৮৩ জন। পঞ্চম দফায় ৩৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন করেছে আদালত। মামলার ৫৯ জন স্বাক্ষীকে ইতোমধ্যে আদালত সাক্ষ্যগ্রহণের জন্যে সমন জারি করেছে।
এর আগে গত ২৩ আগস্ট থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রথম দফায় টানা তিন দিনে মামলার বাদী ও সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস এবং প্রত্যক্ষদর্শী সাহেদুল ইসলাম সিফাতের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছিল।
এরপর গত ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দ্বিতীয় দফায় টানা চার দিনে আরো চারজন স্বাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও আসামীপক্ষের আইনজীবীদের জেরা সম্পন্ন হয়। গত ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তৃতীয় দফায় টানা ৩ দিনে আরো আটজন স্বাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৩১ জুলাই ঈদুল আযহার আগের রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফের বাহারছড়ার এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে খুন হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
এ ঘটনার ৫ দিন পর ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের তৎকালীন ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে প্রধান আসামী এবং টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাসসহ নয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান র্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম। চার মাসের বেশি সময় ধরে চলা তদন্তের পর গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
অভিযোগপত্রে সিনহা হত্যাকাণ্ডকে একটি ‘পরিকল্পিত ঘটনা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
গত ২৭ জুন ওসি প্রদীপসহ ১৫ আসামীর বিরুদ্ধে মামলাটির বিচারের জন্য অভিযোগ গঠন করা হয়।