রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধিঃ
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উষ্কানি দিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য অপচেষ্টা হয়েছে।
আমাদের সরকার এটিকে কঠোর হস্তে দমন করেছে এবং আমরা ভবিষ্যতেও কেউ যদি উস্কানি দেয়, তা দমন করতে বদ্ধপরিকর।”
আজ শনিবার (৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট্রের চেক ও বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারা বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অনন্য উদাহরণ স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে, এটি অনেক দেশের জন্য উদাহরণ। পাকিস্তান রাষ্ট্র ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার মূল কারণ হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা।”
তিনি বলেন, “পাকিস্তানের রাষ্ট্র ব্যবস্থা হচ্ছে একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ব্যবস্থা। এই সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় একটি বৃহৎ জনগোষ্টিকে শত্রু হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়েছে। সেই সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে অসম্প্রদায়িক রাষ্ট্র রচনা করার জন্যই আমরা মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান যুদ্ধ করে সবার মিলিত রক্ত স্রোতের বিনিময়ে এদেশ স্বাধীন হয়েছে।”
হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি উত্তম কুমার শর্মা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো. ভিসি অধ্যাপক বেনু কুমার দে, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার, কক্সবাজার জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী (উপ সচিব) হিল্লোল বিশ্বাস, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইফতেখার ইউনুস, সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাজীব চৌধুরী, চট্টগ্রাম উত্তরজেলা আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ইদ্রিছ আজগর, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি অসীম বরণ সুশীল।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, “ধর্ম যার যার উৎসব সবার, এই চেতনা নিয়েই বাংলাদেশে আমরা বাঙালিরা মিলেমিশে একাকার হয়ে বসবাস করছি। সেজন্য আমাদের দেশে যখন ঈদ উৎসব হয়, সেই উৎসবের আনন্দ শুধু মুসলিমদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না, সেই আনন্দ সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে সঞ্চারিত হয়। একইভাবে যখন বাংলাদেশে পূজা উৎসব হয়, তখন সেই আনন্দ শুধু হিন্দু ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না, সেই আনন্দ সব সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে সঞ্চারিত হয়।”
তিনি বলেন, “দেশে একটি পক্ষ আছে, যারা মনে করে তাদের প্রথম পরিচয় হচ্ছে ধর্মীয় পরিচয়। আমরা যারা আওয়ামী লীগ করি, আমাদের প্রথম পরিচয় হচ্ছে আমরা বাঙালি এবং দ্বিতীয় পরিচয় হচ্ছে কে কোন ধর্মের মানুষ।”
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “বিএনপি সহ তাদের মিত্র কিছু রাজনৈতিক দল আছে, যারা মনে করে তাদের প্রথম পরিচয় হচ্ছে তারা কে কোন ধর্মাবলম্বী। দ্বিতীয় পরিচয় হচ্ছে তারা কি বাংলাদেশী না বাঙালি, এই নিয়ে তারা দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে থাকেন। এটিই হচ্ছে তাদের সাথে আমাদের মৌলিক পার্থক্য।”
তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে দেশে যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ স্থাপিত হয়েছে, এটিকে মাঝেমধ্যে নষ্ট করার জন্য নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করা হয়। সেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য অন্যতম মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।”
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শ্যামল কুমার পালিত, সাধারণ সম্পাদক অসীম দেব, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি এডভোকেট পঙ্কজ কুমার চৌধুরী, সিনিয়র সহ-সভাপতি শৈবাল চক্রবর্তী, সাধারণ সম্পাদক সুপায়ন সুশীল প্রমুখ।