অনলাইন সময় ডেস্কঃ
বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিংক রোডের আশেপাশে হরহামেশাই ঘটছে পাহাড় কাটা, অবৈধ দখলের ঘটনা। চলছে পাহাড়ের ঝিরি দখলও। এসব দখলের নেপথ্যে রয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। পাহাড়ি ঝিরিতে বাঁধ দিয়ে দখলের ঘটনা ঘটলেও স্থানীয় প্রশাসন অনেকটা নীরব ভূমিকা পালন করছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
লিংক রোডের স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্সের ব্যক্তিগত প্রজেক্ট লাগোয়া জঙ্গল সলিমপুর এলাকার পাহাড়ি ঝিরিতে বাঁধ দিয়ে দখলের সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশের পরও বাঁধটি সরেনি, উপরন্তু আরও একটি বাঁধ দেওয়া হয়েছে পাশের ঝিরিতে।
বর্ষাকাল শেষ না হতেই এ সব ঝিরি দখলের ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ। স্থানীয়দের আশংকা, অতিবৃষ্টিতে পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢল আটকে মারাত্মক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করতে পারে ওই পাহাড়ে।
এতে পাহাড় ধসও বাড়বে বলে মত প্রকাশ করেছেন অনেকে। প্রসঙ্গত, গত ১১ সেপ্টেম্বর দৈনিক আজাদীতে ‘বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিংক রোড; পাহাড়ের পর এবার ঝিরি দখল’ শীর্ষক সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
জানা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট টোল রোডের মুখ পর্যন্ত নির্মিত হয়েছে বায়েজিদ ফৌজদারহাট লিংক রোড। বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে প্রায় ৩২০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)।
বর্তমানে প্রকল্পটির মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে কাটা ১৬টি পাহাড়। পাহাড়গুলো ক্রমেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে এবং শুরু হয়েছে ধস। প্রকল্পের আওতায় ৬ কিমি. রাস্তা নির্মাণে কাটা হয় ওই ১৬টি পাহাড়। তবে পূর্বানুমতি ব্যতিরেখে পাহাড় কাটায় ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি সিডিএকে ১০ কোটি ৩৮ লাখ ২৯ হাজার ৫৫৩ টাকা জরিমানা করে পরিবেশ অধিদপ্তর।
এরপর ১৩ ফেব্রুয়ারি আরেক শুনানিতে ওই প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেকট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডকেও ৫ কোটি ২৩ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এদিকে প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি শেষ না হতেই সাম্প্রতিক সময়ে সড়কটির দুইপাশে অবাধে দখল হচ্ছে পাহাড়। এবার দখলের তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে পাহাড়ি ঝিরিও। সরেজমিনে দেখা গেছে, সিডিএর প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সেই আলোচিত পাহাড় কেটে তৈরি করা স্থাপনার পাশেই পানির ঝিরির (শুকনো হ্রদ) মাঝামাঝিতে আড়াআড়ি বড় বড় জিও ব্যাগ ফেলে ভরাট করা হচ্ছে।
সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে মূল ঝিরির মধ্যে শুরু হয় এ ভরাট কার্যক্রম। এক মাস না পেরুতেই লাগোয়া ঝিরিতেও নতুন আরেকটি বাঁধ দেখা গেছে। তবে এসব ঝিরি দখলে কারা জড়িত সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কাজ শেষে ঝিরির পানিতে হাত পরিষ্কার করছিলেন নুরুল ইসলাম নামের এক দিনমজুর। পাশের এসব বাঁধ কারা দিয়েছেন জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানেন না বলে জানান।
যোগাযোগ করা হলে সীতাকুণ্ড উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আশরাফুল আলম বলেন, জঙ্গল সলিমপুর মৌজায় কিংবা স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্সের প্রকল্পের পাশে পাহাড়ি ঝিরি ভরাট দখলের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।