চট্টগ্রামের সময় ডেস্কঃ
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ঘাট ব্যক্তিবিশেষের হাতে ছেড়ে দেওয়ার প্রতিবাদে বৈঠা হাতে নিয়ে মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করছেন সাম্পান মাঝিরা।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচিতে নদী গবেষক অধ্যাপক ড. মো. ইদ্রিস আলী, কর্ণফুলি সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতির উপদেষ্টা অলিউর রহমান, সাম্পান সমিতির সভাপতি লোকমান, সাম্পানচালক সমিতির সভাপতি জাফর আহমদ বক্তব্য দেন।
বক্তারা বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন কর্ণফুলী নদীর বাংলাবাজার ঘাটটি লাইটারেজ মালিক সমিতির সভাপতি হাজি শফি ও হারুন দোভাষ নামে স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছে ইজারা দিয়েছে।
এতে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত পাঁচ টাকা বেশি টোল আদায় করা হচ্ছে। ফলে নিয়মিত মাঝি-মাল্লাদের যাত্রীদের সঙ্গে নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। আবার ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদেরই জরিমানা করছেন। এসব ঘটনার প্রতিবাদে পাঁচ দিন ধরে নানা কর্মসূচি পালন করছেন সাম্পান মাঝিরা।
সাম্পানচালক সমিতির সভাপতি জাফর আহমদ বলেন, করোনাকালে তারা পাঁচ টাকা বেশি টোল আদায় করে, তখন সাধারণ মানুষ কিছু বলেনি। আমরা সাম্পান মাঝিরাও বলেছি করোনাকালে নিচ্ছে, কিন্তু এখনও তারা সেই পাঁচ টাকা অতিরিক্ত টোল আদায় করছে।
কিন্তু অন্যান্য ঘাটে এক টাকা আদায় করা হচ্ছে। অথচ কর্ণফুলি উপজেলা ম্যাজিস্ট্রেট এসে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে আমাদের পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করলেন। আমরা তাকে বললাম, আমরা তো অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছি না, এই অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছে ইজারাদার।
তিনি তা শুনতে রাজি নন। তিনি আমাদের বললেন, আপনারা যদি এ অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ না করেন, এর দায় আপনাদেরই নিতে হবে, পরে জেলও হতে পারে।
কর্ণফুলি সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতির উপদেষ্টা অলিউর রহমান বলেন, সাম্পান মাঝিরা এখন কোথায় যাবে? এক দিকে প্রশাসন অপর দিকে চাঁদাবাজ। একজন সাম্পান মাঝি সপ্তাহে তিন দিন তার সাম্পান চালাতে পারেন।
একজন সাম্পান মাঝি দিনে ৩০০ টাকা রোজগার করলে তার সাপ্তাহিক আয় হয় ৯০০ টাকা। এ ৯০০ টাকায় তার সংসার চলে? একজন সাম্পান মাঝির এ ৯০০ টাকা কেড়ে নেওয়ার জন্য চেষ্টা করছে সিটি করপোরেশন, লাইটারেজ মালিক সমিতির সভাপতি হাজি শফি, মেয়রের বেয়াই হিসেবে পরিচিত হারুন দোভাষ। হারুন দোভাষ বলেছেন, তাকে নাকি ঘাট থেকে কেউ সরাতে পারবে না, তিনি মেয়রের বেয়াই।
আমাদের এত পুলিশ প্রশাসন থাকতে তারা কীভাবে এই অতিরিক্ত টোল আদায় করে? সাম্পান মাঝিরা এখন কোন দিকে যাবে? এক দিকে ম্যাজিস্ট্রেট অপর দিকে চাঁদাবাজ। তাহলে এ পেশা কীভাবে টিকে থাকবে? অথচ এ পেশার সাম্পান মাঝিরা যুগ যুগ ধরে চট্টগ্রামকে বিশ্বে পরিচিত করেছে।