চট্টগ্রামঃ
টাইগারপাসের নান্দনিক সৌন্দর্য রক্ষায় সিটি কর্পোরেশনের যতটুকু দায় আছে তা প্রয়োগ ও গ্রহণে কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।
তিনি মনে করেন, টাইগারপাসের উপর ফ্লাইওভার নির্মাণ হলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যহানি ঘটবে। তাই পারস্পরিক সমন্বয়, সহযোগিতা এবং বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে যে সিদ্ধান্তটি গ্রহণযোগ্য তা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ আমলে নেবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার টাইগারপাস নগর ভবনের অস্থায়ী কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে চট্টগ্রাম ঐতিহ্য রক্ষা পরিষদ নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। মেয়র বলেন, টাইগারপাসের উপর দিয়ে ফ্লাইওভার নির্মাণে আমি আপত্তি জানিয়েছিলাম।
এই ঐতিহ্যসহ চট্টগ্রামের সকল রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষায় চসিক কাজ করে যাবে। পাহাড়, সাগর, নদী ও সবুজ বন-বনানী ঘেরা চট্টগ্রামকে ক্ষতবিক্ষত করতে আমরা দিতে পারি না।
চট্টগ্রাম ঐতিহ্য রক্ষা পরিষদের চেয়ারম্যান সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী টাইগারপাসের ঐতিহাসিক ও প্রাকৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, তা যেন ফ্লাইওভারের নামে কংক্রিটের ইট-পাথরের নিচে ঢাকা পড়ে না যায়। এই দাবি আজ আপামর চট্টগ্রামবাসীর প্রাণের দাবি। নগরপিতা হিসেবে নগরীর ঐতিহ্য রক্ষার দায়িত্ব আপনার। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে মেয়রের কথা অন্য সকল সংস্থাকে আমলে নিতে হবে।
টাইগারপাস রক্ষায় তার সবটুকু প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে সিটি মেয়র বলেন, সিআরবি রক্ষার আন্দোলনসহ চট্টগ্রামের পরিবেশ- প্রকৃতি রক্ষায় আমি সচেষ্ট থাকব। ফ্লাইওভারের পরিবর্তে চসিক বিকল্প প্রস্তাব তৈরি করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ কাজে প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়াকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
মেয়র বলেন, চট্টগ্রামে নির্বিচারে পাহাড় কাটা হয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্তরা তা রক্ষা করতে পারেননি। যতই প্রভাবশালী হোক পাহাড় কাটা বন্ধে তিনি কঠোর ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান।
টাইগারপাসকে নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের আওতামুক্ত করে প্রকল্প সংশোধনের দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি পাঠ করেন পরিষদের সদস্য সচিব সাংবাদিক জসীম চৌধুরী সবুজ। মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান এবং প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া ইতিহাস ও কারিগরি দিক তুলে ধরেন। মেয়র স্মারকলিপি ও বিকল্প প্রস্তাবনা দ্রুত সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে পৌঁছে দেবেন বলে আশ্বস্ত করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিষদের সমন্বয়ক মুজিবুল হল শুক্কুর, যুগ্ম সদস্য সচিব সালাহ্ উদ্দীন শাহরিয়ার, জাবেদ নজরুল ইসলাম, সাংবাদিক আবসার মাহফুজ, অধ্যাপক মুহম্মদ আমির উদ্দিন, সরোয়ার আমিন বাবু, প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ চৌধুরী, একে জাহেদ চৌধুরী, হাসান মারুফ রুমী, আবদুস সবুর খান ও মাইনুদ্দীন চৌধুরী।