চট্টগ্রামের সময় ডেস্কঃ
চিত্রনায়িকা পরীমনি বলেছেন, “আপনারা জামিন চান না কেন? আমি তো পাগল হয়ে যাচ্ছি।” তার তৃতীয় দফা রিমান্ড শেষে জামিন আবেদন না করায় আদালতেই আইনজীবীদের প্রতি এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
বনানী থানার মাদক আইনের মামলায় এক দিনের রিমান্ড শেষে পরীমনিকে আজ শনিবার (২১ আগস্ট) আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডি।
তদন্ত কর্মকর্তা তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন কিন্তু পরীমনির আইনজীবীরা জামিনের কোনো আবেদন করেননি। শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম আশেক ইমাম পরীমনিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এ মামলায় এর আগে দুই দফায় ছয় দিন রিমান্ডে নিয়ে পরীমনিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি। দ্বিতীয় দফা রিমান্ড শেষে গত ১৩ আগস্ট তার জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত।
পরে পরীমনির আইনজীবীরা আবারও জামিনের আবেদন করেন। সিআইডির পক্ষ থেকেও নতুন করে এক দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। ১৯ আগস্ট ঢাকার মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম জামিন আবেদন নাকচ করে পরীমনিকে আরও এক দিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেন।
সেই রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজ শনিবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে পরীমনিকে হাকিম আদালতে এনে হাজতখানায় রাখা হয়। বেলা পৌনে ৩টায় তাকে হাজত থেকে নেওয়া হয় এজলাসে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক কাজী গোলাম মোস্তফা আদালতে দেওয়া তার আবেদনে বলেন, “আসামির কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে।
আসামি ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে পর্যাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণও পাওয়া যাচ্ছে। এসব তথ্য যাচাইয়ের স্বার্থে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখা প্রয়োজন।”
আর আসামিপক্ষের আইনজীবী মজিবুর রহমান শুনানিতে বলেন, “পরীমনি অসুস্থতা রয়েছে। তার সাথে দেখা করতে দেওয়া হয় না। কোনো আইনজীবীর সাথে তাকে কথা বলতে দেওয়া হয় না। আমরা মামলার বিষয়ে আসামির সাথে আলোচনা করতে চাই।”
তিনি বলেন, “আসামি বাংলাদেশের একজন স্থায়ী নাগরিক, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়েছে আইন। এটা একটি সেনসেটিভ মামলা। আইনজীবীরা আদালতে আসামিদের সাথে দেখা ও কথা বলতে পারে। তিনি অসুস্থ, তার লাইফ স্টাইল অন্যরকম। আসামির কাছে জানতে হবে কী ঘটনা ঘটেছিল। আইনি বিষয়ে আমরা কথা বলতে চাই।”
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু এ সময় বলেন, “আসামির সাথে দেখা করতে দেওয়ার বিষয়ে আমাদের আপত্তি রয়েছে। যখন আসামি বের হবে তখন ট্রায়াল স্টেজে কথা বলবেন। এর আগে পরীমনির সাথে তার নানাকে কথা বলতে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের আপত্তি রয়েছে।”
এ সময় বিচারক আসামিপক্ষের আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা কী কথা বলতে চান?”
আইনজীবী মজিবুর রহমান বলেন, “আমরা আইনগত বিষয়ে কথা বলতে চাই। প্রয়োজনে আপনি সিএমএম হাজতখানায় কথা বলার সুযোগ করে দেন। ওখানে তো নিরাপদ জায়গা।”
এরপর বিচারক নথি পর্যালোচনায় আদেশ দেবেন বলে জানান। আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়ে বিচারক এজলাস থেকে নেমে যান।
শুনানি শেষে পরীমনি তার আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী ও কামরুজ্জামান চৌধুরীকে উদ্দেশ করে বলেন, “আপনারা জামিন চান, আপনারা আমার সঙ্গে কী কথা বলবেন? আমি তো পাগল হয়ে যাব।
আপনারা বুঝতেছেন, আমার কী কষ্ট হচ্ছে? আপনাদের নিজেদের মধ্যে কী হয়েছে? কেন জামিন চাচ্ছেন না?”
পরীমনির এমন প্রশ্নের বিষয়ে পরে তার প্রধান আইনজীবী মজিবুর রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, “আমি জামিন চাইনি কিছু টেকনিক্যাল কারণে। কেন জামিন চাইনি সেটা সবাই জানে, সবাই বুঝতে পারে।”