চট্টগ্রামের সময় ডেস্কঃ
ভারতের ৭৫তম স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে অনিন্দ্য ব্যানার্জী
ভারতের ৭৫তম স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সহকারী হাই কমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জী বলেছেন, কোনো অপশক্তি ভারত-বাংলাদেশের শাশ্বত বন্ধনকে ছিন্ন করতে পারবে না।
ভারত ও বাংলাদেশ ১৯৭১ সাল থেকে একসঙ্গে অনেকটা পথ পেরিয়ে এসেছে। দুই দেশের অর্থনীতি খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আজকে আমাদের দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো।
ভারত সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেয়। আমাদের কাছে প্রতিবেশী প্রথমে, প্রতিবেশীদের মধ্যে সবার আগে বাংলাদেশ।
গতকাল সোমবার বিকালে নগরের পাঁচ তারকা হোটেল রেডিসন ব্লুতে ভারতের ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সহকারী হাইকমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জী বলেন, ভারতবর্ষের আধুনিক গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠার ইতিহাস, উপনিবেশিক শাসন থেকে রাজনৈতিক আন্দোলনের ইতিহাস সবকিছুতেই এই উপমহাদেশের সকল মানুষ অবদান রেখেছিলেন।
অবদান রেখেছিলেন, এই চট্টগ্রামেরই বীর স্বাধীনতাপ্রেমী মাস্টার দা সূর্যসেন, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, কল্পনা দত্ত, যাত্রামোহন সেনগুপ্তসহ অনেকে।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতা করতে পেরে আমরা গর্বিত। বাংলাদেশের প্রায় এক কোটি শরণার্থীকে আশ্রয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জোরালো কূটনৈতিক প্রচারণা, স্বীকৃতি প্রদান এবং নানা দেশের সমর্থন আদায়ে ভারত কাজ করেছে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশীদের পাশাপাশি ভারতীয় সৈন্যরা স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রাণ দিয়েছে।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে অনেক উন্নতি লাভ করেছে উল্লেখ করে অনিন্দ্য ব্যানার্জী বলেন, বাংলাদেশের উন্নতি এখন বিশ্বে উদাহরণ। মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি মোকাবেলায় সক্ষমতা অর্জন করায় স্বল্প উন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।
বাংলাদেশের উন্নয়নের পেছনে মূল চালিকাশক্তি হল তার পরিশ্রমী জনগণ। বাংলাদেশের উন্নয়নে ভারত সবসময় পাশে দাঁড়িয়েছে, সেই ধারা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, মাস্টারদা সূর্যসেনরা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে গিয়ে চট্টগ্রামকে চারদিনের জন্য স্বাধীন করেছিলেন। প্রতিবেশী দেশ ভারত বাংলাদেশের দুর্দিনে বন্ধুত্বের পরিচয় দিয়েছে।
আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বলব, ভারতবাসীর প্রতি আমাদের মমত্ববোধ রয়েছে। আমরা চাই আমাদের দুর্দিনের এ বন্ধু চিরজীবন বন্ধুত্বের সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাবে। ভারত গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র।
অসামপ্রদায়িক চেতনায় আমাদের মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। এ চেতনা যুদ্ধজয়ে প্রেরণা জুগিয়েছে। ভারতের এগিয়ে যাওয়া অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক। ভারতের এগিয়ে যাওয়া সমস্ত পৃথিবীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।
রুনা ব্যানার্জীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড.শিরীণ আখতার। বক্তব্য রাখেন সাইডার ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের অধ্যক্ষ জ্ঞানেশ ত্রিপাটি, চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া, চট্টগ্রামের সিইও সুব্রত বিশ্বাস। শুরুতে কবিতা আবৃত্তি করেন প্রমার রাশেদ হাসান।