আনোয়ারা প্রতিনিধিঃ
ইলিশের মৌসুম শেষ আর জাটকা আহরণ নিষেধাজ্ঞার কারনে নদীতে যাওয়া হয়না বঙ্গোপসাগরের জেলে সম্প্রদায়রা ।ইলিশ আহরণে যে নৌকা,ট্রলার ব্যবহার করেন তা ঘাটে নোঙর করে রেখেছেন।নদীতে মাছ ধরার জালগুলো এখন শুকনো হয়ে পড়ে আছে নৌকাতে।
ইলিশের মৌসুম চলে গেলে জেলেরা অলস সময় পার করেন।অলস এই সময়ে জেলেদের প্রধান কাজ জাল মেরামত করা।সাগরে মাছ আহরণ করতে গিয়ে অনেক জাল নষ্ট হয়,জালের বিভিন্ন অংশ ফুটো হয়ে যায়।
এসব জাল মেরামতের মধ্যে দিয়ে অবসর সময় পার করছেন বঙ্গোপসাগরের জেলেরা।ঘাট-সংলগ্ন সুবিধাজনক জায়গায় দলবেঁধে পুরাতন জাল মেরামতের কাজে ব্যস্ত তারা।
বঙ্গোপসাগরের বার আউলিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ঘাটের দুই পাশে শত শত ট্রলার নোঙ্গর করে রাখা হয়েছে। দলবেঁধে মনের আনন্দে জাল মেরামতের কাজ করছেন অধিকাংশ জেলে।
উপকূলজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা মাছঘাট, বেড়িবাঁধ,ফাঁকা জায়গায় জেলেরা জাল মেরামতের কাজ করছে।
নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়া মাত্র তারা নৌকা নিয়ে সাগরে বেরিয়ে পড়বেন। আর সেই প্রস্তুতিতেই জাল বোনা আর মেরামত চলছে। সাগরে রওনা হবে উপকূলের হাজার হাজার জেলেরা।
বঙ্গোপসাগরের বেড়িবাঁধের উপর জাল মেরামত করছেন ইসমাঈল মাঝিসহ অনেকে।মনের আনন্দে বাংলা গানের মিতালুর সুরে গুণ গুণ করে গান গাইতে গাইতে ছেঁড়া জাল মেরামতের কাজ করছেন তারা।পরিবারের উপার্জনের সম্বল হিসেবে ইলিশ মৌসুম চলে গেলে এটায় করতে হয় তাদের।
তিনি বলেন,সারাদিন জাল মেরামত করে ৩০০-৪০০ টাকা আয় হয় সেই অর্থ দিয়ে ভাত জুটে কপালে।জাল বুনে সামান্য টাকা আয় হয় জেলেদের। এ টাকায় সংসার চলে না বলে জানিয়েছে অধিকাংশ জেলে। এ জন্য অনেকে ঋণের ফাঁদে পা বাড়ায়।
অভাব-অনটনে চলে সংসার।
জেলেদের অভিযোগ, সরকারের দেয়া কোনো সুবিধা মেলেনা তাদের কপালে। জেলেদের জন্য বরাদ্দের সিংহভাগই স্হানীয় প্রভাবশালী,রাজনৈতিক ব্যক্তিরা লুটেপুটে খায়। তাই তারা সাগরে ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
আনোয়ারা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রশিদুল হক জানান,১লা নভেম্বর থেকে ৩০শে জুন পর্যন্ত জাটকা আহরণে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।আনোয়ারার বঙ্গোপসাগরের জাটকা আহরণে বিরত থাকা জেলেদের জীবজনযাত্রা নির্বাহের জন্য মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় ভিজিএফ (চাল) বিতরণ করা হবে।
আনোয়ারার ৩৫৮৯ জন জেলে রয়েছে।এদের মধ্যে অসহায় ১৫০০ জনকে ৪০ কেজি করে চাউল বিতরণ করা হবে।